- খুচরো চাই?
- খুচরো?
- চাই? আছে প্রচুর।
- জানা নেই শোনা নেই। আপনি আমায় খুচরো দেবেন কেন?
- বাহ্, আধ ঘণ্টা ধরে বাসে পাশাপাশি বসে আছি। বাস ঢাকুরিয়া থেকে আলিপুর চলে এলো। আপনার খোকার নাম বিট্টা, হাফ ইয়ার্লিতে অঙ্কে কম নম্বর পেয়েছে। কতটা জানি বলুন।
- আপনি কান পেতে আমার ফোনে বলা কথা শুনছিলেন?
- হ্যাঁ। বৌদির গা ম্যাজম্যাজ। আর আজ আপনার বড়ি কিনে বাড়ি ফেরার কথা, ওই কোন সাউয়ের দোকানের বড়ি।
- এই, আপনি তো ডেঞ্জারাস লোক মশাই।
- আরে! এমপ্যাথিতে আবার ডেঞ্জার কোথায়?
- রাখুন। এমপ্যাথি। গায়ে পড়ে খুচরো দেওয়া। এই আপনার মতলবটা কী বলুন তো।
- মতলব ছাড়া কিছু করতে নেই বুঝি? কন্ডাক্টরকে পয়সা দেওয়ার সময়ই দেখলাম তো। মানিব্যাগ থেকে শেষ দশ টাকার নোটটা অফার করলেন। এখন পড়ে সব ড্যাবা ড্যাবা নোট। বড়ি কিনতে গিয়ে বড় রকমের ঝামেলায় পড়বেন তো। দিন, দু'টো পাঁচশো দিন। পাঁচটা একশো, আটটা পঞ্চাশ, পাঁচটা কুড়ি আর দশটা দশ দিচ্ছি। কড়কড়ে নোট। মাইরি।
- ধেত্তেরি। কী গায়ে পড়া লোক মাইরি। বললাম তো, খুচরো চাই না।
- সন্দেহ করছেন? জাল নোট গছিয়ে দেব?
- ট্যুয়েন্টি সেভেন্টিতে বাস করছি মশায়। মার্সেও পিকপকেট হচ্ছে। এ'দিকে আমি ফট করে মিনিবাসে এক উটকো খুচরো-যুধিষ্ঠিরকে বিশ্বাস করে ডুবি আর কী।
- কী বাতিকগ্রস্ত বলুন দেখি আপনি। হাতের খুচরো পায়ে ঠেলছেন। বাজে তর্ক না করে দিন দু'টো পাঁচশো। ভাঙিয়ে দিই, সামনেই আমি নামব।
- খবরদার। খবরদার খুচরো খুচরো করে জোর করবেন না। নয়ত কন্ডাক্টরকে কম্পলেইন করতে বাধ্য হব।
- কন্ডাক্টর কি হেডমাস্টার?
- আপনি কি ডাকাত?
- না। তবে মাইল্ড বিপদে পড়েছি স্যার। আমার খুচরো গোটা করে দিন প্লীজ। আমি জেনুইন। আমার আধার কার্ডের কপি রাখতে পারেন।
- কিন্তু বিপদটা কীসের?
- অটো যাতায়াতের জন্য সাড়ে ছয় কেজি খুচরো জমিয়েছিলাম। এই দু'হাজার সত্তর সালের মধ্যেই বেহালা মেট্রো চালু হয়ে যাবে ভাবিনি। এলিয়েনরা কী সব টেকনোলোজি নিয়ে এমন ইন্টারভিন করল যে আমার অটো-খুচরোর স্টক এখন লায়াবিলিটি। সে কারণেই আমি এখন খুচরো-রবিনহুড স্যার। তিলে তিলে স্টক ক্লীয়ার করছি।
- বেহালা মেট্রো চালু হচ্ছে। মনখারাপ হয়ে যায় ভাবলেই। অমন ঐতিহাসিক আলসে পিলারগুলোর গায়ে কত চাপ পড়বে। নাহ, এমপাথাইজ করতেই হবে। দিন দেখি যা খুচরো আছে।
Thursday, June 7, 2018
খুচরো-রবিনহুড
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment