- মাস্টার, ছেলের প্রগ্রেস কেমন বুঝছ?
- বাপকা ব্যাটা। সিপাহী কা ঘোড়া।
- কমপ্লিমেন্ট না কানমলা?
- আপনার ছেলে কম্পাস দিয়ে চাউমিন খায় সাহাবাবু। প্রগ্রেস প্রগ্রেস করে নিজেকে এম্ব্যারেস করবেন না।
- সিগারেট খাবে মাস্টার?
- কোনোদিন মাংস পোলাও বা রাবড়ি তো অফার করতে শুনলাম না। যাক, তাই দিন। গাধা পেটানোর কাজ, বাড়তি বেঁচে আর কী হবে।
- তা তোমার ইংরেজি খবরের কাগজ কী বলছে?
- ইকনমি ধসছে। নেতাদের লারেলাপ্পাগিরি বাড়ছে। সরকার অপোজিশন সব মিলেমিশে গোল্লায় যাচ্ছে।
- চিন্তার ব্যাপার নাকি?
- চিন্তা দেশের ও দশের। আপনি চালের আড়তদারি করছেন, পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকুন। ইকনোমি যত ঝুলবে তত আপনার পোয়াবারো।
- বলছ?
- অফকোউর্স। তবে ছেলেটাকে বলুন সামান্য ম্যাথেম্যাটিক্স না শিখলেই নয়৷ শেষে আপনার উৎপাতের ধন ও চিৎপাতে বিলোবে।
- মায়ের আদরে ছেলেটা বাঁদর হয়ে পড়ল মাস্টার। আমি কি আর চেষ্টার কমতি রেখেছি? ক্লাস সিক্সে ফেল করল, দিলাম স্কুলের দালান বাঁধিয়ে। টেনে ক্লাস সেভেনে গেলো, ফের ফেল। সে'বার স্টাফরুমের জন্য ফ্রিজ আর চারটে কম্পিউটার কিনে দিলাম। এ'বারে কিছু একটা করো, নয়ত হেডমাস্টার বলে রেখেছে; ছেলেকে ক্লাসে এইটে তুলতে ছাতে দু'টো ঘর তুলে দিতে হবে। তোমার ওপর আমার বড় ভরসা মাস্টার।
- স্বয়ং বীণাপাণি আপনার ছেলেকে টিউশানি পড়ালেও বিশেষ লাভ করতে পারতেন না৷ যা হোক।
- বীণাপাণি কে? ওই নতুন ইতিহাসের দিদিমনি?
- সাহাবাবু। আপনি চালের ব্যবসায় ফোকাস করুন। যা বর্ষার সিচুয়েশন, কালোবাজারির স্কোপ কিন্তু দিব্যি বাড়বে।
- বাড়বে? বলছ? স্টক ধরে রাখব? দেখো মাস্টার, ইকনমির হালহকিকত তোমার থেকেই জানতে পারি।
- এ'বার পাঁচ কিলো দুধেরসর ওজন করিয়ে দিন দেখি।
- পল্টে। মাস্টারকে পাঁচকিলো চাল দিয়ে যা। তা মাস্টার, খাতায় লিখব না নগদ দেবে?
- খাতা?
- নগদ?
- নগদ?
- নয়? দ্যাখো মাস্টার। আমি কম্পাসে চাউমিন তুলি না। হাত দিয়ে কষে ঝোলভাত মাখি। ব্যাবসায় ওয়ান পাইস ফাদার মাদার মাস্টার। তোমার আগের তিনশো বাহাত্তর টাকা বাকি আছে।
- পাঁচ নয়। দেড় কিলো দিতে বলুন৷ নগদে নেব।
- পল্টে। মাস্টারকে দেড় কিলো দিবি। আর দেখিস, মাস্টার মানুষ, ওজনে মারিস না বাবা।
- আপনি একটা যন্তর।
- আমি তো তাই বলি মাস্টার, আমি যন্তর তিনি যন্ত্রী। যেমন চালাচ্ছেন তেমন চলছি। যাক গে,ছেলেটাকে দেখো। আর দেশের হালহকিকত জানিওটানিও। আর একটা সিগারেট খাবে নাকি হে?
No comments:
Post a Comment