প্রচণ্ড রাগ আর প্রবল বিরক্তি নিয়ে একটা আগুন ফেসবুক স্টেটাস লিখতে বসেছিলাম। চারদিকে এত গাম্বাটগিরি আর ভালো লাগে না, ফেসবুকে কিছু একটা না লেখা পর্যন্ত সোয়াস্তি পাচ্ছিলাম না। বেশ যুৎসই দু'একটা সারকাস্টিক রেফারেন্সও তৈরি রেখেছিলাম। সমস্যা বাঁধল আচমকা ছোটমামা এসে পড়ায়।
- কী রে! দিনরাত মোবাইলে মুখ গুঁজে কী করছিস বাবু?
- আহ মামা। ডিস্টার্ব কোরো না।
- দিদি আজ লুচির সঙ্গের এই তরকারিটা বড় যত্ন করে বানিয়েছে। এ'সব একটু শেখ না রে। এখনও সময় আছে।
- ধ্যাত্তেরি মামা। একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজ করছি।
- কাজ? কেন? কাজ করছিস কেন?
- বাহ্, আমি কাজ করিনা?
- আমার পোস্ট অফিসের কাজটা করেছিস? করেছিস?
- আহ্ মামা। এ'সব মিনিয়াল কাজে আমায় যে কেন জড়াও। আর বলেছি যখন করে দেব৷ তাড়া দিও না৷ এখন জরুরী কাজটা সেরে নিই।
- পোস্ট অফিসের কাজ জরুরী নয়?
- সোসাইটির ব্যাপারে কোনো খবর রাখ?
- সোসাইটির পুজো কমিটির সেক্রেটারি রে আমি। এ'বারে ধামাকা প্ল্যান আছে...।
- আরে ধুর। খালি মাইক্রো লেভেলের ধান্দাবাজ চিন্তা। বলি সমাজে কী ঘটছে সে ব্যাপারে কোনো আইডিয়া আছে? একটা বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক সচেতন মানুষ হিসেবে তোমার উচিৎ প্রতি মুহূর্তে আঁতকে ওঠা। উঠছ কী?
- কাঁচালঙ্কা চিবিয়েছি৷ উফ!
- ওই। ও'টাই তোমাদের আঁতকে ওঠার লিমিট। কাঁচালঙ্কা।
- তোর বাতেলা শুনতে শুনতে মগ্ন হয়ে গেছিলাম বাবু, লঙ্কাটা ফিল্টার করতে পারিনি।
- বাতেলা?
- সরি। ইনসাইটস।
- তুমি লুচিই খাও। এ'দিকে দেশ গোল্লায় যাচ্ছে...।
- ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা করেছিস?
- ইয়ে। এ'টা কোথা থেকে এলো?
- করেছিস?
- করব..মানে...।
- লাস্ট ডেটের অপেক্ষা করছিস? বা আর একটা এক্সটেনশনের?
- হ্যাঁ মানে...দিয়ে দেব।
- আমি গতমাসে জমা দিয়েছি, এক্সটেনশনের অপেক্ষা না করে। আর শোন, যতক্ষণ না তুই রিটার্ন জমা করছিস আমায় খামোখা কলার টেনে জ্ঞান দিবিনা। ফের মুখে লঙ্কা পড়ল। অত্যন্ত পেছন-ইয়ে ছেলে হয়েছ।
অরিজিনাল রাগ আর বিরক্তিতে জল পড়ে গেল৷ ফেসবুক স্টেটাস গেল ঝুলে। এখন জলখাবারের লুচি আর সাদা তরকারিতে যদি পোস্টঅফিস যাওয়ার দুঃখ খানিকটা লাঘব হয়।
No comments:
Post a Comment