- আমার বাজানোও শেষ। আই অ্যাম রেডি।
- বাজানো? মানে?
- সে কী! এতক্ষণ ধরে বাজালাম! শুনলেন না? বেহালার সুর? আপনার কানটা গেছে।
- আপনি শত্রুপক্ষের লোক হলেও সৈনিক। আপনাকে অপমানসূচক কথা বলতে আমি চাইনা ক্যাপ্টেন। কিন্তু তবু বলে বাধ্য হচ্ছি। আমার কান নয়। আপনার মাথাটা গেছে। গত আধঘণ্টা ধরে এই যে বেহালা বাজানোর ভানটা করলেন, সে’টা আর যাই হোক সুস্থতা নয়। অবশ্য ফায়ারিং স্কোয়াডের নাম শুনলে মাথার পোকাগুলো নড়ে ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যা হোক। স্কোয়াড রেডি। আপনার কাউকে কিছু জানানোর আছে? শেষ বার্তা?
- ও মা! জানিয়ে গেলাম যে।
- এক্সকিউজ মি?
- ওই যে! বেহালার সুরে। আরে সঙ্গীতের জন্য সবসময় যন্ত্রের প্রয়োজন হয়না স্যার। মিউজিক ইস নট ফায়ারিং স্কোয়াড।
- রীতিমত। আমার মধ্যে যতটুকু ভালোবাসা জমেছিল, বিলিয়ে দিলাম। আহা, আপনি যদি শুনতে পারতেন মশাই, ভেসে যেতেন, বর্তে যেতেন।
- যত্ত পাগলামি। বেহালাই নেই, অথচ হাত পা নেড়ে দুলে দুলে নেচে বলে বেহালা বাজিয়েছি।
- বাজিয়েছি স্যার। আমার এই সেল থেকে অপার্থিব সুর ছড়িয়ে দিয়েছি এ শহর জুড়ে। যার শোনার হৃদয় আছে সে শুনেছে, সব সুরে কানের ফাঁদে ধরা দেয় না স্যার। জানেন, আমার বিশ্বাস অন্তত একজন শুনেছে সে সুর। সমস্ত গোলাগুলির শব্দ আর হাহাকার সরিয়ে রেখে একজন অন্তত সে সুর শুনেছে। আমি নিশ্চিত। বাজাতে বাজাতে একসময় আমি স্পষ্ট দেখলাম এক ভদ্রলোক ছেলে বৌ মা নিয়ে ব্যালকনিতে গা এলিয়ে বসে; পাশে নয়নতারার টাব। ভদ্রলোকের নামটাম জানি না; কিন্তু আহা। তাঁর মুখের তৃপ্ত হাসিটা লাখটাকার। সে শুনেছে, আমার বেহালার সুর। কোথায়, কী ভাবে তা জানি না। বিশ্বাস করুন!
- স্কোয়াড রেডি। শ্যাল উই গো?
- জো হুকুম!