- কী নাম? - আজ্ঞে হরিসাধন দত্ত। - বয়স? - চুয়ান্ন। - পেশা? - বিজনেস। স্ক্র্যাপ কেনাবেচা, বুঝলেন..ওই শিপইয়ার্ড থেকে এজেন্সি নিয়ে...। - আহ, রামকাহিনী ফাঁদতে বলিনি। ব্যবসা বললেই হবে। - বেশ। ব্যবসা। - ঠিকানা? - সত্তরের এ, কালীকৃষ্ণ লাহিড়ী স্ট্রীট। কলকাতা সাতাশ। - এ'বার বলুন। কী চাই..। - আজ্ঞে ওই, বাজিপোড়ানোর লাইসেন্স। - বাজিপোড়ানোর লাইসেন্স করানোর অফিসে কি আপনি জলভরা কিনতে আসবেন? বলি কী কী বাজি পোড়ানোর লাইসেন্স চাই? চটপট বলুন। - আজ্ঞে, এক বাক্স লারেলাপ্পা চকোলেট বোমা, হাফ ডজন জুবানকেশরি তুবড়ি, বাইশটা চুটকি চরকি আর সতেরোটা পিসেমশাই মার্কা মাল্টিকালার রংমশাল। - এই যুগে দাঁড়িয়ে এক বাক্স চকোলেট, ছটা তুবড়ি, বাইশটা চরকি, সতেরোটা রংমশাল। স্ক্র্যাপের ব্যবসা তো ভালোই দাঁড়িয়েছে মশাই। - হে হে। ওই, খেটে খাচ্ছি কোনোক্রমে। এ'বার ওই লাইসেন্সটা স্যার। - এক বাক্স চকোলেট, ছটা তুবড়ি, বাইশটা চড়কি সতেরোটা রংমশাল। তিন মানুষ বাতাস। মানুষ এনেছেন? - তিন মানুষ? বলেন কী! - এতগুলো বাজি! কতটা বাতাস খেয়ে নেবে, বাপ রে বাপ! কম্পিউটারের হিসেবে তিন মানুষ ফিজ আর এমন কী। - আজ্ঞে আমি ভেবেছিলাম দু'মানুষ। তেমনই ব্যবস্থা করে এনেছিলাম। এখন তিন নম্বর মানুষ পাই কোথায়...। - তুবড়িগুলো বাদ দিন, দু'মানুষে হয়ে যাবে। - না না, খোকাকে আমি কথা দিয়েছিলাম যে। তুবড়ি বাদ দেওয়া যাবে না স্যার। আপনি বিল কেটে দিন, আমি তিন নম্বর মানুষ জোগাড় করব। আমার একটা অকাজের চাকর আছে; অকালকুষ্মাণ্ড। তিরিশ বছরের বন্ডে কেনা তাই ওগড়াতেও পারছিলাম না। ভাবছি বাকি দু'জনের সঙ্গে ওকে জুড়ে দেব। ও ব্যাটা বাজির বস্তা নিয়ে বাইরেই অপেক্ষা করছে। লাইসেন্স কেটেই দিন। - বাকি দু'জন কোথায়? - তারাও বাইরেই আছে৷ আপনি বললেই নিয়ে আসব। - রিলেশন? - আমার বাবা মা। এমনিতেও বয়স হয়েছে। অক্সিজেন কন্সাম্পশনের দিক দিয়ে রীতিমত সোশ্যাল লায়াবিলিটি। ও'রা ইলেক্ট্রিক চেয়ারে বসলে এ বছর একটু বাড়তি ট্যাক্স রিবেটও পেতে পারি। হেহ্...। - বেশ। নিয়ে আসুন তিনজনকে। ইলেক্ট্রিক চেয়ারে পনেরো মিনিট লাগবে। তারপর লাইসেন্সের পেপারওয়ার্কে আরো দশ মিনিট। কেমন? - এক বাক্স চকোলেট, ছটা তুবড়ি, বাইশটা চরকি সতেরোটা রংমশাল; সব কটাই থাকছে তো স্যার লাইসেন্সে? ছেলেটার বড্ড শখ! |
Monday, November 12, 2018
লাইসেন্স
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment