“স্বভাব-কবি
আর হওয়া হল না হে। তাই আমি ঠিক করেছি স্বভাব-মাতাল হয়েই যতটা সম্ভব রোম্যান্স
আদায় করে নেব। পারলে পুরোপুরি মাতাল হওয়ার দিকেই ঝুঁকতাম। কিন্তু আজকাল আমার
জিভের পশমে মদের পেরেকের ঠোকাঠুকি সহ্য হয়না। তাই ঠিক করেছি অল্টারনেট পথে গিয়ে
যতদূর সম্ভব ঝিমঝিমে নেশা সংগ্রহ করে ক্রমাগত নিজের অন্তরকে সমৃদ্ধ করে যাব।
শুনেছি চলন্ত ট্রেনের খোলা জানলার পাশে বসে
দুঘণ্টা কাটাতে পারলে নাকি তিন গেলাস সিদ্ধি-পানের সমান স্নেহ-লাভ ঘটে। কথাটা
নেহাত মিথ্যে নয়, হাওড়া টু মেমারি লোকাল
ট্রেনের জানালার পাশে আলুথালু বসে দেখেছি; অল্পেতেই
চোখে মায়া লাগে, বুকে ওম। এক সময় শৌখিন
জমায়েতে স্কচে চুমুক দিয়ে দেখেছি; বাবুরা
যাকে বলে স্মুদ। কিন্তু ব্যাপারটা তলিয়ে দেখে বুঝেছি এই যে স্কচিও সেই স্মুদনেস
বুদ্বুদ হয়ে উড়ে যায় যখন সোফায় লেপটে শিবরাম পড়তে পড়তে হোমমেড বরফলেবুজলের
চুমুক দিই। অ্যাবসোলুট ভডকায়
আত্ম-নিবেদন করাই যায়, কিন্তু নিজেকে অ্যাবসোলিউট-ভাবে
সঁপে দিতে চাইলে দরকার বালিশের নীচে রাখা পূর্ণেন্দুবাবুর কবিতার বই”।
এদ্দূর বলে অমিয়বাবু থামলেন।
সামান্য ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করলাম “আমার এই সস্তা হুইস্কি আপনার রুচবে কিনা সে’টা আপনার স্পীচ শুনে ঠিক ঠাহর করতে পারলাম না”।
অমিয়বাবুর সঙ্গে আলাপটা এই সদ্য হয়েছে ঝাঝা
স্টেশনের ওয়েটিং রুমে। আমাদের দুজনের গন্তব্য আর ট্রেন এক; কাজেই সে সন্ধ্যের ট্রেন যখন সাত ঘণ্টা লেট
চলছে খবর এলো তখন অগত্যা এই ওয়েটিং রুমে এসে গা এলিয়ে দেওয়া ছাড়া আমার আর
উপায় ছিল না। এই ওয়েটিং রুমের অবস্থা তেমন জুতসই নয়, রীতিমত অপরিষ্কার এবং ঘিঞ্জি। লেট ট্রেনের জন্য
হন্যে হয়ে অপেক্ষারত যাত্রীর সংখ্যা এ স্টেশনে নেহাত কম নয়, তবে এই
বিশ্রী ওয়েটিং রুমের দিকে কেউই ঘেঁষছে না। এমন ভ্যাঁপসা ঘরে আটক হয়ে থাকার চেয়ে
প্ল্যাটফর্মে পায়চারী করা অনেক ভালো। আর জনমানবহীন বলেই এই ওয়েটিং রুমটি আমার এত
পছন্দ হয়েছে। শুকনো গলায় এতক্ষণ অপেক্ষা আমার
সইবে না অথচ প্ল্যাটফর্মে বসে লুকিয়েচুরিয়ে দু’ঢোক
গলায় ঢালতে গিয়ে যদি ব্যাপারটা রেলপুলিশের চোখে পড়ে; তাহলে ফের হাজার রকমের হ্যাপা হজম করতে হবে।
আধো-অন্ধকার ওয়েটিং রুমে ঢুকে সুটকেসটা বেঞ্চির
ওপর রাখলাম আর তারপর সন্তর্পণে বের করলাম বোতলটা। সঙ্গে সোডাজলের বোতল এবং
চানাচুরের ডিবে থাকেই, আয়োজনের অভাবে আমায় ভুগতে
হয়না। সুটকেস দিয়ে সামান্য আড়াল তৈরি করে ওয়েটিং রুমের বেঞ্চিতে সমস্ত
সাজিয়েগুছিয়ে সবে বসেছি; এমন সময় ওয়েটিং রুমের
পশ্চিম কোণের অন্ধকার ভেদ করে কেউ বলে উঠল;
“হুইস্কি
মনে হচ্ছে”?
চমকে উঠেছিলাম। গায়ে কালো চাদর জড়িয়ে এমন
ভাবে অন্ধকারের সঙ্গে মিশেছিলেন ভদ্রলোক যে ঘরে ঢোকার পর থেকে টেরই পাইনি যে এ
ওয়েটিং রুমে অন্য কেউ রয়েছে। ভদ্রলোক বেঞ্চি ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই ঘরের মধ্যে জমে
থাকা ঘোলাটে হলুদ আলোয় দেখলাম ভদ্রলোক বৃদ্ধ; বয়স
সত্তর বাহাত্তরের কম হলে অবাকই হব। মাথার
চুল যে ক’গাছি অবশিষ্ট আছে তা প্রায়
সম্পূর্ণই সাদা, গালের চামড়া ঝুলে পড়েছে।
তবে ভদ্রলোক আমার দিকে এগিয়ে আসতে বুঝলাম যে তাঁর চোখ জোড়া এখনও এতটাই উজ্জ্বল
যে বয়সের ভার ছাপিয়ে তাঁর ধারালো ব্যক্তিত্বটা প্রকট হয়ে পড়ে।
সাবধান হলাম তবে আশঙ্কার কোনও কারণ দেখলাম না।
বললাম;
- আমি
ঠিক বুঝতে পারিনি এখানে আপনি…।
- না
না, আমি মাইন্ড করিনি। প্লীজ, আপনার সাধনায় ব্যাঘাত ঘটাতে চাইনি মোটেও।
স্রেফ কিউরিওসিটির বসেই…।
ভদ্রলোকের গলায় কোনও রকম উষ্মা বা বিরক্তি আছে
বলে মনে হল না। নিশ্চিন্তে গেলাসে চুমুক দিয়ে আলাপ জুড়লাম। মদের সঙ্গে চানাচুরের
চেয়েও বেশি জমে সামান্য গল্পগুজব। অল্প সময়ের মধ্যেই জানা গেল যে ভদ্রলোকের নাম
অমিয় মজুমদার, আসানসোলের মানুষ। রেলের অবসরপ্রাপ্ত ক্লার্ক, গল্পের বইয়ের পোকা। মদের নেশার জ্বালায়
বইপড়ার নেশা জলাঞ্জলি দিতে হলেও; সাহিত্য-প্রীতি খানিকটা
আমারও আছে, কাজেই গল্প জমে উঠল সহজেই।
তিন নম্বর পেগে এসে মনে হল যদিও ভদ্রলোক বয়সে
আমার জ্যেঠুর সমান; কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে
হুইস্কি অফার করাটা বোধ হয় সৌজন্যের মধ্যে পড়ে। আমার সেই সৌজন্যের উত্তরেই
ভদ্রলোক নিজের মদ-হীন-মাতলামি নিয়ে বাহারে কথাগুলো বললেন। আমার মনে হল ভদ্রলোকের
ইচ্ছে আছে সামান্য চেখে দেখার কিন্তু সাহস পাচ্ছেন না।
অসময় অস্থানে হুইস্কি পানের সঙ্গী পাওয়া
চাট্টিখানি কথা নয়, পাঁড় মদ্যপরা এর মূল্য
নিশ্চিত ভাবেই বুঝবেন। নরম সুরে বললাম;
- এ
হুইস্কি সস্তা হতে পারে তবে চোলাই নয়। টলে পড়বেন না এ’টুকু আশ্বাস দিতে পারি।
- আরে
না হে না। আমায় অত ভীতু ভেবো না। আর এক সময় যে নেশাভাং করিনি তাও তো নয়। তবে ওই
যে বললাম…।
- এখন
মদ-হীন মাতলামির দিকে ঝুঁকেছেন, এই তো?
- করেক্ট।
তবে তোমার সঙ্গে গল্প করতে দিব্যি লাগছে কিন্তু।
- দিব্যি
কেন লাগছে বলুন তো? আমার ধারণা ছিল যে আমার মত
বেহেড মাতাল সবারই বিরক্তির কারণ।
- বেহেড
মাতলামিকে আমিও যে খুব ভালো চোখে দেখি তা নয়। কিন্তু এখনও যা দেখছি; তোমার হেড তো দিব্যি ঘাড়ের ওপর স্টেডি হয়ে
বসে। বরং প্রতিটি পেগের সঙ্গে
তোমার কথাবার্তা আর ধারালো হচ্ছে। তা, দু’নম্বর পেগ শেষ হল নাকি? তুমি কিন্তু নিশ্চিন্তে তিন নম্বরটি ঢালতে
পারো।
এমন ভাবে ঘণ্টাখানেক কাটলো। এই সদ্য পরিচিত
বৃদ্ধের সঙ্গে গল্পআড্ডা এমন সহজ হয়ে আসবে তা ভাবিনি। ভদ্রলোক কৌতূহলী কিন্তু
ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানোর বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই। আর সত্যিই বাংলা সাহিত্যের
সমঝদার, এমন কী ভদ্রলোকের রাজনীতি
বিষয়ক জ্ঞানও বেশ রসালো। আগেও বলেছি, সাহিত্য-প্রীতি
আমার সামান্য আছে বটে কিন্তু এই অমিয়বাবুর জ্ঞানের ব্যাপ্তি অবাক করার মত।
রাজনৈতিক মতবাদেও গা-জ্বালানো বায়াস নেই, বরং
চুলচেরা বিশ্লেষণের দিকেই তাঁর আগ্রহ বেশি। মোট কথা, এমন
জমাটি আড্ডা-সঙ্গী পেয়ে যেন ঘিঞ্জি ওয়েটিং রুমের গ্লানি অনেকটাই কেটে গেল, ট্রেন-লেট হওয়ার বিরক্তিও গেল কমে।
পাঁচ নম্বর পেগের শেষে মাথার মধ্যের ভালোলাগা
ঝিমঝিমটুকু পরিণত হল সামান্য অস্বস্তিকর টিপটিপে ব্যথায়, বুঝলাম এবার থামতে হবে। নয়ত ট্রেনে ওঠার সময়
গোলমাল ঘটতে পারে। তখন বিভূতি আর শরদিন্দুর লেখার স্টাইল নিয়ে মনোগ্রাহী দু’চার কথা বলছিলেন অমিয়বাবু, হঠাৎ প্রসঙ্গ পাল্টে বললেন;
- আপত্তি
না থাকলে দাও একটা ছোট পেগ আমার দিকে এগিয়ে। শেষ ও জিনিস স্পর্শ করেছি অন্তত বছর
তিরিশ আগে। এমন চমৎকার আড্ডাও দেওয়ার সৌভাগ্যও যে শেষ কবে হয়েছে তা মনে করতে
পারিনা।
- বেশ
তো, তবে গেলাস যেহেতু একটাই…।
- তোমার
গেলাসেই না হয়…।
হেসে একটা প্রমাণ সাইজের পেগ বানিয়ে
অমিয়বাবুর দিকে এগিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম;
- তাহলে
এ আসক্তি এক সময় আপনারও ছিল?
- আসক্তি
নয়, প্রবল নেশা। ইন ফ্যাক্ট; ব্যাপারটা প্রায় অসুস্থতার পর্যায় চলে গেছিল।
থেরাপি, কবিরাজি; অনেক চেষ্টাই ফেল পড়েছিল।
- স্বীকার
করে লজ্জা নেই, আমার ব্যাপারটাও কতকটা
তেমনই।
- সে
আমি বেশ বুঝেছি।
- জানতে
বেশ আগ্রহ হচ্ছে, এমন জাঁদরেল নেশা ছাড়ার মত
অসাধ্য সাধন আপনি করলেন কী করে।
- ব্যাপারটা
খুব ইন্টারেস্টিং বুঝলে। সেই মিরাকেলটা ঘটেছিল তিরিশ বছর আগে ঠিক এখানেই।
- এই
ঝাঝা শহরে?
- এই
প্ল্যাটফর্মে। এই ওয়েটিং রুমে বসেই।
- বলেন
কী! মেগা কোইন্সিডেন্স যে।
- না
হে। তা ঠিক নয়। বরং নির্ভুল প্ল্যানিং বলতে পারো।
- ঠিক
বুঝলাম না।
- নিমু
তান্ত্রিক শুরুতেই বলেছিল, এসব তাবিজেটাবিজে কাজ হওয়ার
নয়। বাপের বকুনি, মায়ের স্নেহ আর বৌয়ের
ঘ্যানঘ্যানেও এ রোগ যাওয়ার নয়। কাজ হবে যদি নিজে নিজেকে বোঝতে পারি। অর্থাৎ
নিজের কাউন্সেলিং নিজে; সেটাই একমাত্র পথ।
- নিমু
তান্ত্রিক?
এবারে গলাটা কেমন শুকোতে আরম্ভ করেছিল। সাহস
করে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম;
- আপনি
কি সাইঁথিয়ার নিমু তান্ত্রিকের কথা বলছেন অমিয়বাবু?
- হি
ইজ দ্য ওয়ান।
- আমি…আমি…এই
দুদিন আগেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি। ওই, আমার
বউই ওঁর খবর জোগাড় করেছিল, মন্ত্রবলে নাকি মদ গাঁজা সবই
ছাড়ানোর ক্ষমতা রাখেন তিনি। আমার ঠিক বিশ্বাস হয়নি জানেন; আসলে এ’কদিনে
কম বুজরুক তো দেখলাম না। কিন্তু বউয়ের ঘ্যানঘ্যানে বাধ্য হয়েই একপ্রকার গেছিলাম, দিন পনেরো তাঁর আশ্রয়ে থেকে নিরন্তর তাঁর সেবা
করলাম। কিন্তু সে বাবাজী না দিলেন ওষুধ আর না দিলেন কোনও তাবিজ। আমাকে ওই একই কথা
বললেন ; নিজে নিজেকে না বোঝানো
পর্যন্ত এ নাগপাশ থেকে নাকি মুক্তি নেই। আর টোটকা বলতে সে এক উদ্ভট ব্যাপার। আমার
এই সদ্য সীল ভাঙা হুইস্কির বোতলে সামান্য ছাই মিশিয়ে দিয়ে বললেন; এ মদ খেয়ে ফেল। বুঝুন কাণ্ড তবে, যার কাছে মদ ছাড়বার টোটকা চাইতে এসেছি সেই বলে
কিনা…। মাফ করবেন, সেই
ছাই মেশানো হুইস্কিই আপনাকে অফার করতে হল…।
- নিমু
তান্ত্রিক হেলাফেলার মানুষ নয়। হুইস্কিতে ও ছাই মেশালে সে হুইস্কি চরণামৃতের
সমান।
- কে
জানে। কিন্তু আমার দ্বারা মদ ছাড়া সম্ভব হবে কিনা জানি না। মদের নেশা চাপলে নিজের
নামও ভুলে যাই, জানেন অমিয়বাবু? এমন এ পাগলামো। ভাববেন না বাড়িয়ে বলছি…। একটা কথা জানেন; আপনাকে দেখে আজ আমার সত্যি লোভ হচ্ছে; এমন লোভ আগে কখনও কাউকে দেখে হয়নি। আপনি এ
নেশার বিষ ছাড়তে পেরেছেন, আপনার জ্ঞানের পরিধি কতটা ব্যাপ্ত।
এ বয়সেও আপনার চিন্তাভাবনা কতটা উজ্জ্বল। অথচ আমি বেশ দেখতে পারছি এভাবে চললে আমি
স্রেফ ভেসে যাব, আমার সংসারটায় ভেসে যাবে।
কিন্তু সব জেনেবুঝেও…কিছুতেই মদ ছাড়তে পারছি না।
এ যে কী জ্বালা। অবিশ্যি আজ আপনাকে দেখে আমার ভারী লোভ হচ্ছে…খুব ইচ্ছে করছে আপনার মত হতে…। বিশ্বাস করুন…।
আমি মদের নেশায় নিজের নাম ভুলে যাই এ কথা সত্যি কিন্তু অমিয়বাবু, এই স্বল্প আলাপেও আপনার প্রতি আমার এই সমীহটা
কিন্তু একদম খাঁটি…।
তোমায় অবিশ্বাস করার স্পর্ধা আমার নেই। আমি
জানি মদের নেশা যখন বিষাক্ত জন্তুর মত তোমায় গিলে খায় তখন তুমি নিজের নামও ভুলে
যাও অমিয়…।
- অমিয়? আমার নামও অমিয়? ও...ওহ
তাই তো...আমিও অমিয় মজুমদার। এ যে দেখি গ্র্যান্ডফাদার অফ অল কোইন্সিডেন্সেস! অথচ আমার আর আপনার মধ্যে কতটা তফাৎ...।
- নিমু
তান্ত্রিকের কথা মিথ্যে নয়। নিজে নিজেকে বোঝাতে না পারলে এ নেশা ছাড়ানো সম্ভব
নয়। ভবিষ্যৎ তো তাঁর মত মহাপ্রাণের কাছে অজানা নয়, তিনি
জানতেন মদ তুমি ছাড়বেই। বরং তোমার পনেরো দিনের সেবায় খুশি হয়ে তিনি এমন
ব্যবস্থা করে দিলেন যে মরার আগে তুমি যেন একবারের জন্য সামান্য হুইস্কি চেখে যেতে
পারো; কারণ যে নেশা বেঁধে রাখে না, তার স্বাদ নেহাত মন্দ নয়।
- আপনি…আপনি…।
- আমিই।
আমিই তুমি । নিমু তান্ত্রিক ভবিষ্যৎ থেকে আমায় তুলে আনলে তোমায় বোঝাতে। এবং তুমি
দিব্যি বুঝেছ হে। আমারও দিন ফুরলো; মরার
আগে নিমু তান্ত্রিক এই পেগ মদ চাখিয়ে নিলেন; তাঁকে
সেবা করার জন্য সামান্য বখশিশ আর কী। থ্যাঙ্ক ইউ অমিয়, চিয়ার্স।
- চিয়ার্স
অমিয়বাবু।
বৃদ্ধ গেলাসে তৃপ্তির চুমুক দিলেন।
সামনে বসে থাকে বৃদ্ধের দিকে মাথা নাড়িয়ে
চিয়ার্স বললাম বটে, কিন্তু বোতলটা বেঞ্চির তলায়
গড়িয়ে দিতেই তা অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। বেশ বুঝতে পারছিলাম মাথার ঝিম ভাবটা কেটে
যাচ্ছে, মুখের হুইস্কি-তেতো ভাবটা
উবে গিয়ে চরণামৃতর স্বাদ টের পাচ্ছিলাম। হঠাৎ মনে হল আমার ওই ছাইপাঁশের দরকার
এবারে ফুরিয়েছে। বৃদ্ধ অমিয় হালদারের গেলাসের মদ শেষ হতেই ভদ্রলোক ওয়েটিং রুমের
পশ্চিমের কোণের অন্ধকারে ফের মিশে গেলেন।
আমিও সেই ভ্যাঁপসা ওয়েটিং রুম থেকে বেরিয়ে
প্ল্যাটফর্মে বেরিয়ে এলাম; ঝাঝা স্টেশনের বুক স্টলে
বিভূতিভূষণ বা শরদিন্দুর বই পাওয়া যাবে কি?
No comments:
Post a Comment