সিরিজে ট্যুইট করা। ট্যুইটই রইল; সাতটা পরপর সাজানো।
***
সিনেমায় দেখা কোন মৃত্যু মনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছে? দিনদুয়েক ধরে সেই মর্মে একটা পোস্টার 'কোট' করে অনেকেই নিজেদের সিনেমা স্মৃতি ঘেঁটে ট্যুইট করছেন।
আমি গতকাল লিখেছিলামঃ
ডাক্তার অগ্নীশ্বর মুখুজ্জ্যে। হঠাৎ মনে হল, ব্যাপারটা এক কথা সেরে ফেলার সুযোগ তেমন নেই। (১)
"অগ্নীশ্বর" সিনেমায় অজস্র ভুলচুক নিশ্চয়ই আছে। ক্ষেত্র বিশেষে "বাড়াবাড়ি" ও কম নেই তবে সে বিশ্লেষণ করবেন সিনেমার ছাত্ররা। আমাদের কাজ নিজের ভালো লাগাগুলকে আঁকড়ে রাখার। একমুঠো শিউলি হাতে মৃত্যুর আগে ডাক্তারের বলা কথাগুলো বড় নাড়া দিয়েছিল। (২)
অগ্নীশ্বর নিজের ডাক্তারি জীবন কাটিয়েছেন মানুষের সেবায়। একদিকে তাঁর ধারালো ব্যক্তিত্বের নিরেট বর্মে বহু মানুষের কোমলতা ধাক্কা খেয়ে ফিরে গেছে আবার অন্যদিকে দেশের মানুষের গোঁড়ামি, ভণ্ডামি, যুক্তিহীনতা ও কুংস্কারে বারে বারে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন তিনি নিজে। (৩)
কিন্তু হাজার ক্ষতবিক্ষত হয়েও, পাহাড়প্রমাণ বিরক্তি নিয়ে ঘর ছেড়েও;
মারা যাওয়ার ঠিক আগে অগ্নীশ্বর স্বীকার করে যাচ্ছেন যে ফের জন্মানোর সুযোগ পেলে তিনি এই দেশেরই মাটিতে..এই মানুষগুলোর মধ্যেই ফিরতে চান। (৪)
সিনেমাটা যখন প্রথম দেখি তখন বড় জোর ক্লাস সেভেন-এইটে পড়ি। একজন নিরেট যুক্তিবাদীর এমন শেষ আকুতির মধ্যে যে কী অপূর্ব স্নেহপূর্ণ 'ন্যাশনালিজম' টের পেয়েছিলাম। তাতে অন্যের কলার টানা নেই, যুক্তির শৈথিল্য নেই অথচ মায়া আছে। আর আছে মানুষের জন্য অল্পবিস্তর কাজ করবার অদম্য ইচ্ছে৷ (৫)
অগ্নীশ্বর সিনেমার শেষের দিকে রয়েছে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী অগ্নীশ্বরের গৃহত্যাগ ও তীর্থভ্রমণ। মোগলসরাইয়ের স্টোরবাবুর ছেলে মাকে কাঁধে নিয়ে তীর্থে বেরিয়েছে; তা দেখেই তাঁর ঈশ্বরদর্শন সম্পূর্ণ হয়৷ সিনেমায় এ সময় জুড়ে একদিকে রয়েছে গঙ্গা স্তোত্র আর অন্যদিকে ধনধান্য পুষ্পে ভরা। (৬)
শেষ দৃশ্যে অগ্নীশ্বরের চিতার আগুন আর "ভাইয়ের মায়ের এতো স্নেহ, কোথায় গেলে পাবে কেহ,
ও মা তোমার চরণ দুটি বুকে আমার ধরি,
আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি"।
ক্লাস সেভেনে কেঁদে ফেলেছিলাম৷ আজও...ইয়ে। চোখে বালিটালি পড়ে যায় আর কী। (৭- শেষ)
(অগ্নীশ্বর চট করে মনে পড়ল তাই গড়গড় করে বলে গেলাম। তবে এর বাইরে আরও কত যন্ত্রণা আর কবিতা আছে। পথের পাঁচালিতে দুর্গা বা পলাতকে হরিমতির মৃত্যু; ভাবলেই ভেঙেচুরে পড়ার জোগাড় হয়)।
1 comment:
এই প্রথম অগ্নীশ্বর দেখলাম। এবং আপনার লেখার সাথে একমত। ভালো থাকবেন।
Post a Comment