**১**
- কী রে বাবু। দুপুর থেকে অমন গুম মেরে বসে আছিস। মনটন খারাপ বুঝি?
- ও কিছুনা।
- মাকে "কিছু না" বলে পাশ কাটালে হবে রে?
- যাও না মা। আমার অনেক পড়া বাকি আছে।
- শিঙাড়া মালপোয়ায় মনখারাপ সারিয়ে দিতে পারি বটে। কিন্তু তুই সেধে পড়তে বসছিস, এ ব্যামোর চিকিৎসা তো আমি জানিনা।
**২**
- কী রে! মাঠে এলিনা কেন কাল বিকেলে? আজকেই বা এমন ঘরের মধ্যে গুম মেরে বসে আছিস কেন?
- তুই যা তপু।
- যা বললেই যাওয়া যায় ভাই? চ'। মান্তুদার বাড়িতে ক্যারম পিটিয়ে আসি।
- আমি যাবনা।
- জব্বর মনখারাপ দেখছি। তবে চিন্তা নেই৷ সেরে যাবে।
- যত বাজে কথা..।
- এই দ্যাখ। পুজোবার্ষিকী। হাতে চলে এসেছে৷ ভালো করে দ্যাখ। সুনীল, মতি, শীর্ষেন্দু, সঞ্জীব, সমরেশ। পেপারকাকা হাতে গরম দিয়ে গেল ভাই৷ তাই তোর কাছে ছুটে আসা।
**৩**
- আরে৷ অত ভাবার কী আছে৷ এই ইন্টারভিউতে হল না। পরেরটায় হবে। রিল্যাক্স। এতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই।
- ভেঙে পড়িনি বাবা৷ শুধু ওই..।
- মনখারাপ। তাই তো?
- না না। ও কিছু নয়..।
- কিছু না হলেই ভালো। একটা ঝটিকা পুরীসফরের জন্য তৎকালে টিকিট কেটেছি। শুক্কুরবার রাতের ট্রেনে যাওয়া, সোমবার রাতের ট্রেনে ওয়াপিস। সমস্ত মনখারাপ আমরা বে অফ বেঙ্গলে ভাসিয়ে দিয়ে আসব৷ কেমন?
**৪**
- কী ব্যাপার দাদুভাই৷ এখনও ঘুমোওনি?
- ঘুমোব দাদু। এই যাই৷ কিন্তু তুমিও তো না ঘুমিয়ে ছাতে এসে..।
- আমার ইনসমনিয়া৷ তোমার মনখারাপ।
- ও মা। আমার মনখারাপ..এ খবর তোমায় আবার কে দিল।
- তোমার দিদা বললে।
- দিদা?
- মাঝেমধ্যে গল্পগুজব করে। খবরাখবর দিয়ে যায়। তোমাদের দেখা দেয়না। কিন্তু আমার কানের মাথা না খেলে তার চলে না। যাক গে দাদুভাই, ছাতে আমার পাশে থাকো না কিছুক্ষণ। আজ আকাশ বেশ সাফ আছে, তোমায় কনস্টেলেশন চেনাই। মনখারাপের আইডিয়াল থেরাপি।
**৫**
- মনখারাপ?
- জ্বালিও না।
- উরিব্বাস। প্রচণ্ড মনখারাপ?
- যত বাজে কথা।
- বেশ কথা বলব না। চিঠি লিখি? সেই যেমন বিয়ের আগে লিখতাম? কাঠখোট্টা মনখারাপ গলিয়ে জল করিয়ে দেওয়া সেই ঢলঢলে গদগদে চিঠি? লিখি?
**পুনশ্চ**
- বাবা, অমন চুপ করে বসে যে?
- ও কিছু না। এমনি।
- মনখারাপ। তাই না?
- তুই অফিস থেকে কখন ফিরলি খোকা?
- কথা ঘুরিয়ে লাভ নেই ইওর অনার। ধরা পড়ে গেছ।
- ধুস।
- এলাবোরেট করে না বললেও চলবে৷ তবে সিম্পটম যখন ধরে ফেলেছি, টোটকাও নিয়েই আসি। পুরনো ছবির অ্যালবাম আর দু'কাপ কফি; কামিং সুন অ্যাট আ ব্যালকনি নেয়ার ইউ।
No comments:
Post a Comment