- হুঁ?
- কী চাই? চাকরীতে টপাটপ প্রমোশন বাগানোর মাদুলি? শুগার কন্ট্রোলে রাখার তাবিজ? হাড়বজ্জাত মানুষজনের বদনজর এড়িয়ে চলার জন্য কবচ?
- কই, না তো।
- তা'হলে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসা কেন?
- দ্যাখ বুড়ো..।
- আমার সঙ্গে যারাই দেখা করতে আসে তারা আমায় চমৎকারিবাবা বলে ডাকে। আপনি-আজ্ঞে করে নুয়ে পড়ে।
- তাঁরা তো আর তোর বাপ নয় বুড়ো।
- উফ। আদত তন্ত্রসাধকের বাপ-ঠাকুরদা থাকতে নেই।
- প্রায় এক বছর হতে চলল বাড়ি ছেড়ে এইসব ফোরটুয়েন্টিগিরি শুরু করেছিস। আর কতদিন!
- ফোরট্যুয়েন্টিগিরি? আমি রেগে গেলে একটা যাচ্ছেতাই কাণ্ড ঘটে যাবে কিন্তু।
- মানছি আমি একসময় তোর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছি৷ পারিবারিক ব্যবসায় ফাঁকি দিচ্ছিস দেখে মেজাজ খিঁচড়ে গেছিল, না হয় ভালোমন্দ চারটে কথা বলেই দিয়েছি। কিন্তু তাই বলে তুই তারাপীঠে এসে পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙার ব্যবসা শুরু করলি রে বুড়ো?
- আর একটাও আজেবাজে কথা শুনলে এমন বাণ মারব..।
- বাড়ি ফিরে চল বুড়ো। আমি না হয় মায়াদয়াহীন স্ক্র্যাপের দালাল। মায়ের কথা ভেবে অন্তত বাড়ি ফের।
- তন্ত্রসাধকের আবার বাড়ি। তন্ত্রসাধকের আবার মা।
- তুই না হয় বাড়িতে গিয়েই একটা এই হোকাসপোকাসের চেম্বার খুলে বসিস বুড়ো। আমি নিজের সমস্ত ব্যবস্থা করে দেব। নীচের তলার একটা ঘরে সর্ষের তেলের গোডাউন করব ভাবছিলাম। সে'খানে বসেই না হয় তুই মাদুলি বেচিস।
- সাধনাটাকে ধান্দাবাজি বলে হ্যাটা করাটা রীতিমত অন্যায়৷ শ্মশানের মড়াপোড়া হাওয়া গায়ে না ঠেকলে তন্ত্রসাধনা চলে না। আর তাছাড়া গেরস্থালির গুমোট পরিবেশে আর আমায় বাঁধা সম্ভব নয়৷
- সম্ভব নয়?
- কভি নহি।
- কোনও ভাবেই আর তোকে বাড়ি ফেরানো যাবে না?
- শ্মশানকালী প্রাইভেটলি স্বপ্নে এসে রিকুয়েস্ট করলেও নড়ছি না।
- হ্যাঁ রে বুড়ো, কাল থেকে পুজো। পুজোয় বাড়ি ফিরবি না?
- হুঁ?
- পুজোয় বাড়ি ফিরবি না?
- পুজো? বাড়ি। পুজো। বাড়ি।
- কী হল বুড়ো?
- না মানে...যদিও তন্ত্রসাধনায় পুজো পুজো আদেখলামো থাকতে নেই..।
- কাল থেকে পুজো। বাড়ি ফিরবি না তুই?
- বাবা। পুজো সত্যিই এসে গেল। তাই না?
- তাই তো। এসেই গেলো।
- আমি বাড়ি যাব বাবা। বাড়ি যাব।
- আলবাত যাবি। পুজোয় বাড়ি না গেলে চলে?
বুড়োকে বাড়ি ফেরানোর তুকতাকটি চমৎকারিবাবার বাপ দিব্যি জানতেন। বাড়ি ফেরার নিশির ডাক - "পুজো"।
No comments:
Post a Comment