ফেসবুকে বেশ কিছু ফুড অ্যান্ড রেসিপি মার্কা গ্রুপের মেম্বার আমি৷ বলা ভালো স্লীপিং মেম্বার৷ নিজে কন্ট্রিবিউট করিনা কিন্তু মন দিয়ে বিভিন্ন খাবারদাবারের ছবি দেখি। সে'সব দেখতে আমার বড় ভালো লাগে৷ খাওয়াদাওয়া ব্যাপারটার সঙ্গে মানুষের এত ভালোবাসা জড়িয়ে আছে, তা ভেবেও কী চমৎকার লাগে৷
এ'সব গ্রুপের আপডেট থেকে জানতে পারি কেউ নিজের বৃদ্ধ বাবার জন্মদিনে যত্ন করে পাঁচ পদ রান্না করেছেন, কেউ মানিব্যাগের টানটান অবস্থা মধ্যে কোথাও সস্তায় পুষ্টিকর রেস্তোরাঁ খুঁজে পেয়ে উল্লসিত, কেউ অফিস ফেরত ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে বাড়িতে এগরোল বানিয়ে ফেলেছেন৷ এমন কতশত খাবারের গল্প নিয়মিত টাইমলাইনে দেখতে পাই, উপভোগ করি, "বাহ্" বলে মাথা নাড়ি, আবার কখনও স্রেফ হেসে ফেলি৷
খাওয়ার ছবি শেয়ার করতে গিয়ে বা সে প্রসঙ্গে দু'লাইন লিখতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটা ছেলেমানুষি আবেগ বেরিয়ে আসে৷ আমি সেই আবেগের ভক্ত৷ খাবার নিয়ে সিরিয়াস লেখালিখি পড়তে অবশ্য ভালোই লাগে, ইউটিউবে নামীদামী ফুডব্লগারদের বিশ্লেষণ শুনতেও চমৎকারই ঠেকে৷ কিন্তু খাবারের ব্যাপারে আমজনতার হুজুগে শিশুসুলভ ভালোবাসাটুকু সত্যিই লাজওয়াব৷
খাবারদাবারের গল্পের কোয়ালিটি শুধুই ইতিহাস, রেসিপির খুঁটিনাটি, রান্নাবান্নার টেকনিকালিটি, ছবির কোয়ালিটি বা ভাষার গুণ দিয়ে বিচার করা সম্ভব নয়৷ এই ধরা যাক, কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে, শেয়ালদার কাছাকাছি অন্নপূর্ণা রেস্টুরেন্টে বসে মটন টিকিয়ার সঙ্গে রুমালি রুটি খাচ্ছি৷ টিকিয়ার গায়ে চোট পড়ার আগে স্রেফ ঝোল মাখিয়ে চার খানা রুমালি হাওয়া৷ ওয়েটারদাদা আর দু'টো রুমালি পাতে দিয়ে বিরক্ত মুখে জানতে চাইলেন, "টিকিয়াটাকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে পুষবে নাকি ভাইটি"? এ গল্পে খাবারের অ্যানালিসিস নেই বটে, কিন্তু এই ফিচেল স্মৃতির দাম তো কম নয়৷
ফেসবুকের ফুড গ্রুপগুলোয় এমনই ভালোবাসার কবজি ডোবানো ছবি নিয়মিত দেখি আর আনন্দে মন মজবুত হয়ে ওঠে৷
No comments:
Post a Comment