("আতরঙ্গি রে" সিনেমাটা প্রসঙ্গে এ'টা লেখা৷ স্পয়লার হয়ত আছে। 'হয়ত' বললাম কারণ আমি সে অর্থে ঠিক নিশ্চিত নই)
- বাবা।
- বল্।
- আবার কবে আসবে?
- সামনের মাসে। যেমন আসি।
- ফের ওই দিন'দুয়েকের জন্য?
- সে'টা নিয়ে এখন থেকেই চিন্তা করবি না শিঙাড়াটা ঠাণ্ডা হওয়ার আগে জাস্টিফাই করবি।
- সামনের মাসের চোদ্দ তারিখ নতুন চাকরীটায় জয়েন করছি।
- নতুন প্রফাইল। সামলে খেলিস বুড়ি৷ কোনও ফচকেমো নয়। ইট ইজ আ হিউজ অপরচুনিটি।
- তুমি তার আগের হপ্তায় আসবে তো? প্রফাইলটা গোটাটাই টেকনিকাল। তোমার সঙ্গে একটু আলোচনা করে নিলে সুবিধে হত৷
- আমার জন্য আবার ওই টেকনিকাল আলোচনা কেন রে বাবা। আমি বরং তোকে কলকাতার ইতিহাসে কাঠিরোলের সিগনিফিক্যান্স বোঝাতে একটা ওয়াকে নিয়ে যাব পরের বার৷ ট্যুরটার নাম দেব রোলের উত্তর দক্ষিণ।
- বাবা, আমার নার্ভাসনেসকে পাত্তা না দেওয়ার বদঅভ্যাসটা এ'বার ছাড়ো দেখি। মা থাকলে এমন কথায় কথায় আমার চিন্তাগুলো উড়িয়ে দিতে পারতে?
- তোর মায়ের তো আবার সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি ছিল। উফ, তুই একা রাস্তা পেরোলেও সুমির হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে পড়ত। অমন নার্ভাসনেস নিয়ে কি প্যারেন্টিং হয় নাকি! যাক গে, বুড়ি! মায়ের কথা ভেবে মনকেমন হয় খুব, তাই না?
- খুব৷ খুউব।
- আমারও। মাঝেমধ্যে এতটাই মনখারাপ হয় যে মনে হয় দূরের চাকরীটা ছেড়ে তোর সঙ্গে গিয়েই থাকি। তুইই না হয় বাপকে খাওয়াবি।
- আমি তো চাই তুমি আমার সঙ্গেই থাকো৷ কিন্তু, চাকরীটা ছেড়ে দিলে কলকাতায় তোমার মন টিকবে?
- টিকবে না, তাই না রে?
- আদৌ নয়৷ যাক গে, সামনের মাসে এগরোল পরিক্রমার জন্য মুখিয়ে রইলাম।
- নামটাকে ডায়লুট করিসনা প্লীজ। রোলের উত্তর দক্ষিণ। রিমেম্বার দ্য ট্যুর নেম।
**
- সুমি৷ কেমন দেখলে মৃণালকে?
- একইরকম। প্রতিবার যেমন দেখি।
- জানি৷
- ডাক্তার, মৃণাল কি কোনওদিনও আমায় চিনতে পারবে না?
- আমরা চেষ্টা তো করছি সুমি। নিজের সন্তানের মৃত্যু৷ শকটা বড্ড ইন্টেন্স।
- মিলির মৃত্যু তো আমাকেও সহ্য করতে হয়েছে ডাক্তার৷ আমিও তো মা। কই আমি তো এমন..।
- সবার ডিফেন্স মেকানিজম একই রকম হয়না যে সুমি। আর মৃণালের কেসটা বড্ড কিউরিয়াস। তোমার মধ্যে সে মিলিকে খুঁজে নিয়ে সে স্বস্তি খুঁজে পেয়েছে৷ ওই ইমোশনাল কমফর্ট জোন থেকে ওকে টেনে বের করা সহজ হবে না।
- বারবার ইচ্ছে হয় ওকে ঝাঁকিয়ে বলি আমি সুমি। আমাদের মিলি আর নেই। ওর বুড়ি আর নেই।
- ইট উইল নট হেল্প।
- কিন্তু আমার যে ওকে দরকার৷ আমি যে আর পারছি না৷ আমাকে মুছে ফেলতে ওর আদৌ কষ্ট হলনা ডাক্তার?
No comments:
Post a Comment