Friday, January 14, 2022

মধুশালা



- মধুদা। কড়া করে একটা কফি দাও দেখি৷ 

- সে কী৷ আজ লেবু চা বাদ?

- দিনটা মোটেও সুবিধের ছিল না মধুদা৷ ম্যাক্সিমাম ক্যাফেইন না হলে চলছে না৷ ও হ্যাঁ, আজ সঙ্গে লেড়ো নয়৷ মামলেট৷ ডবল। 

- তা দিচ্ছি৷ কিন্তু, কেন গো৷ অমন ম্যাদা মেরে আছ কেন?

- সে লম্বা ফর্দ মধুদা৷

- শুনি৷ 

- এক নম্বর। কোহলি অফস্টাম্পের বাইরে খোঁচা দিয়েই চলেছে।

- হ্যাঁ, এ'টা চাপের। 

- দু'নম্বর। এলগার আউটটাউট হওয়া নিয়ে সবিশেষ মাথা ঘামাচ্ছে না৷

- কফিটা ভালোই কড়া করতে হবে।

- তাই তো বলি৷ তাছাড়া আরও আছে। তিন নম্বর৷ গিজারে জল গরম করে ঠাণ্ডা জলের কল খুলে মাথা ভেজালাম। 

- এহ হে৷ না ভাই, ব্ল্যাক কফিই দিই। সুপার কড়া।

- চার নম্বর। অফিসের জরুরী রিপোর্ট ড্রাফট করে, সাতপুরনো বস্তাপচা রিপোর্ট অ্যাটাচ করে মেল পাঠালাম৷ 

- নাহ। মামলেটটা খেও না৷ পোচ করে দিচ্ছি৷ ডবল ডিমেরই।

- পাঁচ নম্বর৷ আজ মাসের তেরো তারিখ৷ মোর দ্যান ফিফটি পার্সেন্ট অফ দ্য মান্থ রিমেইনিং৷ কিন্তু আচমকা ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স দেখে বুকটা শুকিয়ে গেল। লেস দ্যান থার্টি পার্সেন্ট অফ স্যালারি রিমেইনিং। 

- যাচ্চলে৷ আজ সিঙ্গল ডিমের পোচই অর্ডার দাও।

- তুমিও দাগা দেবে মধুদা? সাকি এই ছিল তোমার মনে?

- তুমি সিঙ্গল পোচ অর্ডার দেব৷ আর আমি বোনাস সিঙ্গল পোচ খাওয়াব। গতকাল পাড়ার ক্যারম টুর্নামেন্টে রানার্স হয়েছি৷ ভাবছিলাম তোমায় একটু ট্রীট দেব৷ আমার রিবাউন্ড শটটা তো তোমারই ডিরেকশনে ইম্প্রুভ করেছে। 

- তোমার জবাব নেই মধুদা৷ কতবার বলি, এই মধু টী স্টল পালটে দোকানটার নাম মধুশালা রাখো৷ আই ওয়ান্ট টু ওয়াক ইন্টু আ পানশালা এভ্রিডে৷ আর যাই হোক, আমার মেজাজটায় তো গালিবের সুবাস লেগে আছে, তাই না? আমি ডিজার্ভ করি মধুশালা৷ 

-  তা বটে৷ সামনের মাসে বরং সাইনবোর্ডটা রিপেন্ট করে নেব৷

-  মধুদা৷ জ্যাঠামশাই কেমন আছেন?

- মাসখানেকের মধ্যে ভেলোর একবার না গেলেই নয়। যাক গে। দেখি৷

- কত দরকার ছিল যেন?

- আড়াই মত। 

- কত জমল?

- দেড়।

- দ্যাখো৷ তবে শোনো, ভেলোর হবেই৷ আমরা আছি তো৷ মধুশালা কি তোমার একার প্রপার্টি শালা?

- বাপটা তো আমারই।

- মধুদা৷ খদ্দের তো আর কেউ নেই৷ কফি দু'কাপ বসাও না৷ তারপর বসো পাশে৷ তোমায় একটা দেশাত্মবোধক গান শোনাই৷ 

- দেশাত্মবোধক? 

- এলগার বিদেয় দে মা, জিতে আসি৷ এলগার বিদেয় দে মা, জিতে আসি। কফি নিয়ে এসো, বাকিটা শোনাবো৷ 

- বহুত খুব।

No comments: