১।
।।"হারি আপ" জ্যেঠু।।
আলো ফোটার আগে থেকেই তাঁরা মন্ত্রপাঠ শুরু করবেনঃ
"পাংচুয়াল না হলে পিকনিক কেন, কোনও বড় কাজই কোনওদিনও করতে পারবি না"!
"ফিরতে রাত হলে বিস্তর ঝ্যামেলা হবে, তখন যেন আমায় বলতে এসো না"!
(ভোর ছ'টার সময়) "আরে দুপুর গড়ালে বেরোবি নাকি রে তোরা"!
মোট কথা অনবরত ঘ্যানঘ্যান করে সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলবেন৷ রাত থাকতে উঠে, স্নান সেরে ফিটফাট জামাকাপড় পড়ে বারান্দায় পায়চারি করবেন আর চিৎকার করে পাড়া মাথায় তুলবেন৷
২।
।।"প্ল্যানার" বড়দা৷।
টারজানের কলজে নিয়ে এরা পিকনিকের পরিকল্পনা সাজান। এদের মতে অন্তত তিন রাত্রি বাইরে ক্যাম্প করে না থাকলে নাকি পিকনিকই হয় না৷ শিকার করা জিরাফের ঠ্যাঙ ঝলসে না খেলে নাকি পিকনিকের মেজাজটাই মাটি৷ ঝর্নার জলে চুমুক দিয়ে তেষ্টা মেটানোর পক্ষে এরা৷ দশহাত দূরে লম্ফঝম্প করে চলা সিংহের গর্জন শুনতে শুনতে এরা শালপাতার গায়ে লেগে থাকা চাটনি চেটে খেতে চান।
এইসব মোহময় চাওয়া-পাওয়া নিয়েই তাঁরা প্ল্যান ছকেন; লেপের তলে শুয়ে, মশলা জোয়ান চিবুতে চিবুতে৷ অত্যাধিক দৌড়াদৌড়িতে তাদের বিশ্বাস নেই৷ তাদের কাজ শুধু পিকনিক স্পটে গিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলা, "আরে ধুর, এ'সব ট্যুরিস্ট স্পট আমার পোষায় না৷ পিকনিক করেছিলাম বটে নাইনটি ট্যুর জ্যানুয়্যারিতে৷ সে'এক অ্যাডভেঞ্চার বুঝলি..কফি আর এক প্লেট পকোড়া আন দেখি..গুছিয়ে সে গল্পটা বলি"৷
৩।
।।শেফ-মামা।।
তারা রান্নাবান্নায় বৃহস্পতি৷ কিন্তু টীকা-টিপ্পনিতে গর্ডন র্যামসের পিসেমশাই।
পেঁয়াজ কুচোতে খাবি খান কিন্তু বারো মিনিটে ভিন্ডালুর রেসিপি বলে জনতাকে তাক লাগিয়ে দেবেন৷
কালো জিরে আর চা-পাতার তফাৎ ধরতে পারেন না কিন্তু উনুনের ওপর কোন অ্যাঙ্গেলে কড়াই রাখলে মুর্গি নিখুঁতভাবে কষবে, সে'সম্বন্ধে এরা নিশ্চিত৷
এই বিশারদরা পিকনিকের বাসন মাজার সময় ব্যাডমিন্টন খেলবেন কিন্তু খেতে বসে প্রতিটা পদের ইতিহাস নিয়ে লেকচার নামাবেন অবলীলায়।
~~
আর এদের ছাড়া পিকনিক?
ক্যান্টিনবিহীন কলেজ৷
কেষ্টাবিহীন অর্জুন।
টেনিলেস পটলডাঙা৷
No comments:
Post a Comment