ছোটবেলায় পড়া প্রিয় অ্যাডভেঞ্চার বইয়ের ইলাস্ট্রেশন রিক্রিয়েট করার প্রসেসটা নির্ঘাৎ দারুণ জমজমাট৷ ব্যাপারটায় ঠিক কী কী ঘটে?
সেটে সবার হাতে ফেলুদার বইয়ের সেই ছবি আঁকা পাতাটা ঘোরাঘুরি করে?
নির্দেশক অভিনেতা অভিনেত্রী এবং সমস্ত কলাকুশলীরা কি নিজেদের কাজ সাইডে রেখে বইয়ের ছবিতে লালমোহনের বসার অ্যাঙ্গেল আর সেটের লালমোহনের বসার ভঙ্গি মিলল কিনা তা নিয়ে মারাত্মক তর্ক জুড়ে বসেন?
সেটের ফেলুদাকে কি পাইকারি হারে জ্ঞান শুনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়তে হয়?
অকুস্থলে উপস্থিত প্রতিটা মানুষই কি ভেবে বসেন না যে " আহ্, আমিই যদি ফেলুদার সেই একপেশে ক্যারিস্মাটা নিজে গিয়ে ডেমোন্সট্রেট করে দিতে পারতাম"!
আর সেটের 'এক্সট্রা' বা ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা সংলাপহীন জুনিয়র অভিনেতারাও কি বইয়ে আঁকা ছবিতে নিজের খুঁজে হদ্দ হন? এই যেমন এ'খানে বইয়ের আঁকায় এক দম্পতি (তাদের দাম্পত্য নেহাতই আমার কল্পনার ফসল) খানিকদূরে হেঁটে যাচ্ছেন। আবার সেটের ছবির আবছা ব্যাকগ্রাউন্ডে সে দম্পতি দূরের সোফায় বসে। সোফায় বসে কি তাদের মনের মধ্যে খতরনাক হ্যাঁচোড়প্যাঁচোড় শুরু হয়েছে "প্রিসাইস রোলে" নিজেদের ফেলতে না পেরে?
দিনের শেষে ফাইনাল আউটপুট দেখে মানুষজন কি নিজেদের হাত কামড়ে ওঠেন খুচখাচ 'তফাৎ স্পট' করে? "এ কী ভাই, নুনের ডিবেগুলো ফ্রেমে নেই কেন? কে সরিয়েছে? কোর্ট মার্শাল, রাইট নাউ"!
আর, এর ফলে কি একসেট মানুষ নতুন করে ফেলুদা পড়তে শুরু করেন?
কে জানে!
প্রিয় বইয়ের আঁকা ছবি শুটিং ফ্লোরে রিক্রিয়েট হওয়ার ব্যাপারটা রীতিমত টিকিট কেটে দেখা যায়৷ কিন্তু তা যখন সম্ভব নয়, তখন "আরিব্বাস" বলে বুকের ছ্যাঁত চেপে "দার্জিলিং জমজমাট" বইটা তাক থেকে নামানো ছাড়া আর বিশেষ কোনও উপায় থাকে না।
No comments:
Post a Comment