- কাজ হয়ে গেছে অনিলদা৷
- বডি?
- সাফ৷
- সাফ হলেই ভালো। দু'দিন পর কাগজে কোনও ময়লা খবরটবর যেন না দেখি।
- একটা কেসে সামান্য ভুলচুক হয়ে গেছিল..তা'নিয়ে বারবার খোঁটা দেবে?
- সামান্য ভুল৷ সামান্য ভুলের কনসিকুয়েন্স বোঝার বয়স তো তোর হয়েছে অর্ণব৷
- আসলে কী জানো অনিলদা, সে'বার হল কী..।
- পার্ফেকশনে বিশ্বাস না থাকলে এ লাইনে এত বছর টিকে থাকতে পারতাম না। আর তুই হাজারটা কাজ নিখুঁতভাবে করলেও, এই একটা ভুলের জন্যই তোর হান্ড্রেড পার্সেন্ট স্ট্রাইক রেট আর রইলনা। ইট উইল নেভার বি আ কম্পলিট হান্ড্রেড পার্সেন্ট।
- অত অবিশ্বাস থাকলে, আমায় দলে রেখেছ কেন অনিলদা?
- বিশ্বাস করলে তোকে ছেড়ে দেওয়াটা সহজ হত অর্ণব।
- তোমার কথাবার্তা সবসময় বোঝাও যায় না..।
- টাকাটা রাখ। আর কাল রাতের দিকে উইনস্টন ক্লাবে আসিস৷
- ক্লাবে?
- বাইরে অপেক্ষা করিস৷ একটা গাড়ি তোকে পিক করে নেবে সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ৷ আধঘণ্টা আগে ডিটেলস পেয়ে যাবি৷
- রিভলভার সঙ্গে রাখব?
- তোকে ইন্স্যুরেন্স তো বেচতে ডাকছি না৷ ও'টা ছাড়া আসবিই বা কেন।
- টার্গেট?
- সুকুমার হালদার। ক্লাব থেকে বেরোবে ডিনার সেরে। ওর ড্রাইভারকে হাত করা আছে৷ মিনিটে তিনেকের একটা উইন্ডো পাবি৷
- সুকুমার..সুকুমার হালদার..। পুলিশের বড়কর্তা সুকুমার হালদার?
- হুম৷
- ওর সঙ্গে খান দুই কনস্টেবল তো থাকবেই..।
- মিনিট তিনেকের উইন্ডো পাবি৷ বললাম তো। সে দায়িত্ব আমার।
- একটু বেশি রিস্ক হয়ে যাচ্ছে না অনিলদা?
- ভুলচুক করছিস৷ নার্ভাস হচ্ছিস৷ আজকাল নতুন টিউশনির ব্যাচ ধরেছিস নাকি?
- শোনো অনিলদা..। হালদার তো আর ওই আগরওয়াল বা দত্তর মত এলেবেলে টার্গেট নয়৷
- তোর ফিজ তিনগুণ৷
- যদি কাজটা না নিই?
- টিউশনিগুলোও আর করা হবে না তোর৷ তুই মাস্টার নোস অর্ণব।
- তুমি হুমকি দিচ্ছ অনিলদা?
- অর্ণব৷ হুমকি আদানপ্রদান হয় সমানে-সমানে৷ বিটউইন ইকুয়ালস৷ আমি তোর সঙ্গে ট্র্যান্সপ্যারেন্টলি ইনফর্মেশন শেয়ার করছি৷ তুই কাজটা করবি?
- গাড়ি পাঠিও৷ কাল উইনস্টন ক্লাবে পৌঁছে যাব।
- চিয়ার আপ অর্ণব৷ কাল কড়কড়ে টাকাগুলো পকেটে ঢুকলে দেখবি নার্ভাসনেস ফুসমন্তর। আর হ্যাঁ, পুরো টাকাটাই আগাম দেব৷ ওই গাড়িতেই রাখা থাকবে, পিছনের সীটে, একটা চামড়ার পাউচে৷
**
- হ্যালো, অনিলদা?
- বলো।
- কাজ হয়ে গেছে৷
- গুড৷ ভেরি গুড৷
- টাকাটা?
- একটা চামড়ার পাউচ দেখতে পারছ? টার্গেট যে গাড়িতে, সে'টার ব্যাকসীটেই থাকা উচিৎ৷
- উম..দেখি..এই যে..আছে৷
- খুলে দেখো।
- আরে, এ তো অনেক বেশি..।
- পাক্কা তিনগুণ। পকেটস্থ করে ফেলো৷
- কিন্তু এই সামান্য কাজের জন্য এতগুলো টাকা..।
- তুমি এদ্দিন আমার হয়ে কাজ করছ সুকুমার৷ অজস্র কাজ সেরেছ; লাশ সরিয়ে দেওয়ায় কোনওদিনও গোলমাল হয়নি৷ অথচ ওই টিউশনি মাস্টার কী হ্যাপাটাই না দিলে সে'বার৷ তোমারই হেল্প নিতে হল স্ক্যান্ডালটা ধামাচাপা দিতে৷ ব্যাপারটা ঠিক অভিপ্রেত নয়৷
- ওহ, এও আমাদের দলেই ছিল?
- কী জানো মিস্টার সুকুমার হালদার, পার্ফেকশন ছাড়া আমার ব্যবসা অচল৷ কাজেই পেস্টকন্ট্রোল না করলে চলছিল না৷ আর তোমার ফিজের ওপর বাড়তি টাকাটা ধরে নাও বোনাস, ফর মেন্টেনিং আ হান্ড্রেড পার্সেন্ট রেকর্ড৷ তাছাড়া অত জমজমাট এলাকায় তিন মিনিটের মধ্যে গোটা ব্যাপারটা সেরে ফেলা সহজ নয়৷ যাকগে, তোমার হাতের কাজ ভালো; বডিটার খবর কাগজে পড়তে হবে না, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত৷
No comments:
Post a Comment