ওর ওপর ভীষণ বিরক্ত বোধ করছিলাম৷ একটা পেল্লায় বাক্স সোনপাপড়ি এনেছে, ভালো কথা৷ সোনপাপড়ি খুবই ভালো জিনিস৷ অনায়াসে আইপিএলের চার-ছয়-উইকেটের তালে তালে উড়িয়ে দেওয়া যায়৷ কাজেই সে জিনিস এনে ভুল করেনি৷ ভুল করেছে একটা বিশ্রী ফ্লেভার নিয়ে এসে৷ এলাচ ফ্লেভারের সোনপাপড়ি! এর কোনও মানে হয়?
প্রথম কামড় দিয়েই টের পেলাম গোলমালটা৷ ফুরফুরে সোনপাপড়ির সেই পিওরিটিটাই নেই৷ আরে সবকিছুতে রিমিক্স রিমেক ঝঙ্কার বিটস বা আনপ্লাগড ব্যাপারস্যাপার আনলেই হল নাকি? এক কামড়েই জিভটা কেমন যেন হয়ে গেল৷ ধুস৷ গোটা চার পিস খাওয়ার পর টের পেলাম যে মেজাজটাই গেছে ছাই খিঁচড়ে৷ অগত্যা ঢকঢক করে খানিকটা জল খেতে হল জিভের নিউট্রালিটি ফেরত আনতে৷ খানিকটা গাভাস্কারের আইপিএল কমেন্ট্রিও শুনতে হল, মন থেকে এলাচ-সোনপাপড়ির ইনফ্লুয়েন্স দূর করতে৷
এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল৷ অল্প গোলমাল হয়ে গেল যখন টের পেলাম জল-গাভাসকারের কম্বিনেশনেও জিভের একদিকটা চ্যাটচ্যাটে হয়েই আছে৷ সে'টা একটা অস্বস্তি৷ এলাচ সোনপাপড়ির বাক্সটা তখনও বন্ধ করা হয়নি। ভাবলাম চ্যাটচ্যাটে ব্যাপারটা জিভে ইউনিফর্মলি ডিস্ট্রিবিউট করে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ৷ অতএব আরও কয়েক পিস সোনপাপড়ি খরচ হয়ে গেল। আবারও টের পেলাম, কী অদরকারী জিনিস এই এলাচ দেওয়া সোনপাপড়ি৷
সে কথাটাই ওকে বুঝিয়ে বলছিলাম৷ সোনপাপড়ির বাক্স দেখলে আর উঠিয়ে নিলে, অমন ইনডিসিপ্লিন মিষ্টির ব্যাপারে থাকলে চলবে কেন? সিস্টেম চাই, চেকলিস্ট চাই৷ আনারস ফ্লেভারের মাটন প্যাটিস নিশ্চয়ই তুলে নেওয়া চলে না? কাজেই প্যাকেটটা মন দিয়ে পড়তে হবে৷ নতুন ফ্লেভার দেখলে নিজের মনটা ঘেঁটেঘুঁটে দেখতে হবে সে স্বাদ মনের মধ্যে একটা পজিটিভ হাওয়া ছড়িয়ে দিচ্ছে কিনা৷ তারপর আসবে পারচেজ ডিসিশন৷
এ'দিকে আমার আবার সিরিয়াস আলাপ-আলোচনার সময় মুখ চালানোর দরকার পড়ে৷ হাতে কাছে রাখা এলাচ সোনপাপড়ির বাক্সটা তাই বন্ধ করা হয়নি৷ কাজেই যা হওয়ার হল৷ ফাঁকা বাক্সটা চাটতে চাটতেই নিদান হাঁকতে হল;
"অমন কেয়ারলেসলি সোনপাপড়ি কেনার কোনও মানেই হয় না"।
No comments:
Post a Comment