গুপ্তিপাড়ায় মায়ের পিসির বাড়ি। ছোটবেলায় সে'খানে কয়েকবার গেছি রটন্তী কালীপুজো দেখতে। সে পুজো হত মাঝরাতে, শীতের অমাবস্যার কনকন ছাপিয়ে জমজমাট আয়োজন। গুপ্তিপাড়ার দাদু, অর্থাৎ মায়ের পিশেমশাই নিজেই পুজো করতেন। ঋষিসুলভ মানুষ; শান্ত, গম্ভীর অথচ হাসিহাসি মুখ। প্রচুর আত্মীয়স্বজন জড়ো হত। নিপাট ভক্তির সঙ্গে হইহইরইহই মিলেমিশে সে অন্ধকার রাত্রি আলোআলো হয়ে উঠত। সন্ধ্যে থেকে বড়রা পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত, ছোটরা খামোখা ছুটোছুটি করে হন্যে হত এবং এন্তার কানমলা খেত। পুজো শুরু হতে হতে মাঝরাত। নেহাতই ছোট ছিলাম, রাত জেগে পুরো পুজোটা ঠিক দেখা হয়ে উঠত না।
পরের দিন দুপুরে একটা জবরদস্ত ব্যাপার ঘটত। দুপুরবেলা খাওয়ার পাতে জুটত ভোগের নিরামিষ পাঁঠার মাংস। পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া রান্না, অতএব নিরামিষ। এই অকাট্য যুক্তির কাছে মাথা না নুইয়ে উপায় নেই। আর সেই ভোগের মাংসের ঝোল দিয়ে ভাত মাখার সময়ই প্রথম টের পেয়েছিলাম যে বাঙালির কালীপুজোয় নিরামিষের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
No comments:
Post a Comment