- বুঝলে দত্ত, এ'বার পুজোটা ভাবছি টোটালি রিল্যাক্স করে কাটাব।
- আপনি তো লাকি চ্যাপ দাদা, টানা পাঁচদিন ছুটি? তা, এ'বারেও কি দার্জিলিং? নাকি কেরলটেরল কিছু।
- ঘোরাঘুরি যে কতটা ট্যাক্সিং...উফ। টিকিট বুক করো। প্যাকিং করো, আনপ্যাকিং করো, রিপ্যাকিং করো, রিআনপ্যাকিং করো। গাড়ি ভাড়া করো। সাইটসিয়িংয়ের ছক কষো। প্ল্যান এ, প্ল্যান ব, প্ল্যান সি। উফ, ভাবতেই পালসরেট বেড়ে যাচ্ছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। লেবুসরবত খেতে হবে এ'বার।
- ও, তা'হলে এ'বার পুজোয় মণ্ডপ সাফারি। হ্যাঁ, সেই ভালো। হাঙ্গামা কম। ঠাকুর দ্যাখা, খাওয়াদাওয়া; হান্ড্রেড পার্সেন্ট ফুর্তি।
- তুমি দুর্গাপুজো দেখেছ কোনোদিন দত্ত? হাবভাব দেখে তো মনে হয় তুমি বলিভিয়ার মানুষ। উইকিপিডিয়া পড়ে দুর্গাপুজোর কথা জেনেছ।
- সে কী!
- ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখতে কী পরিমাণ স্ট্যামিনা দরকার হয়,সে'টা তুমি জানো না? পায়ের মাসল এক্কেবারে লোহার মত হতে হবে। রেস্টুরেন্টে আড়াইঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য দরকার অ্যালুমিনিয়ামের কোমর। আর ঘাম, ধুলো, ইত্যাদি হজম করার ইনফাইনাইট ক্যাপাসিটি। ঠাকুর দেখে রিল্যাক্স করা আর ঘামাচিতে বিটনুন মালিশ করা একই ব্যাপার।
- পুজোর পাঁচদিন ঘরের মধ্যে বসে? বিছানায় লম্বা হয় গোটা হপ্তা? শুধু খাওয়া শোওয়া আর বই?
- তুমি ব্যাচেলর মানুষ ভাই দত্ত। ব্যথা কী বুঝবে। গিন্নী আর আমার গোটা বছর অফিস, দৌড়ঝাঁপ হুড়মুড়; ও'টাই আমাদের ন্যাচরাল স্টেট অফ ইকুইলিব্রিয়াম। হুট করে পাঁচদিনের ছুটিতে বাড়ি বসে থাকতে গেলে বস্তাবস্তা কাজ এসে পড়বে ভাই। গিন্নী দেখবে বাথরুমের মেঝে রিপেয়ার করা দরকার, আমি দেখব বাড়ির দেওয়ালে এক পোচ রঙ না পড়লেই নয়। মোটকথা বাড়িতে থাকলেই কাজের বোঝা। আর সেই কাজের বোঝার জর্জরিত হয়ে দু'জনের খিটিরমিটির।
- আপনার মতলবটা কী বলুন তো? পুজোয় রিল্যাক্স করবেনটা কী'ভাবে?
- পুজোর পাঁচদিনই অফিস করছি ভাইটি। সক্কালসক্কাল হাজিরা। সন্ধেবেলা রিটার্ন। মাঝখানে ফাঁকা অফিসে আমি অ্যালেক্সান্ডার সেলকার্ক। নিজের ইচ্ছেমত প্যান্ট্রিতে গিয়ে কফি অমলেট বানাবো। ফাইল ক্লিয়ার করব। অফিসে লোক কম থাকবে, দিব্যি গান শুনতে শুনতে হেলেদুলে কাজকর্ম করা যাবে। এক্কেবারে স্পা ফর সোল, টানা পাঁচদিন।
- দাদা, আপনি সোশিওপ্যাথ।
- মন্দ লোকে কত কী রটায়, সে'সবে কান দিও না। কেমন?
No comments:
Post a Comment