Sunday, November 6, 2022

দুই খোকা



মফস্বলি ওই কোণাটা নেহাতই জলাজঙ্গল। সাপখোপ, পোকামাকড়, ঝোপঝাড়, কাদাজল; কোনও কিছুরই অভাব নেই৷ তবে নরম রোদ্দুরের দুপুরে ও'দিকটায় গেলে আরামদায়ক ছায়া আর নদী ছুঁয়ে আসা তুরীয় ঠাণ্ডা হাওয়া জুটতে পারে। সে লোভেই ও'দিকটায় গেছিলাম। বসেছিলাম একটা গজিয়ে ওঠা ছোট্ট শিবমন্দিরের চাতাল ঘেঁষে।

আচমকা, চার্চের পাঁচিল টপকে দুই স্কুল-টেক্কা দেওয়া ছোকরা এ'পাশে নেমে এলো৷ আমাকে খানিকক্ষণ সন্দিগ্ধ চোখে জরীপ করার পর বুঝল আমি স্পাই নই, বরং আমার চোখে বোধ হয় সামান্য প্রশ্রয়ই ছিল। এরপর ঝাড়া আধঘণ্টা সে দু'জন স্রেফ রকমারী বাঁদরামি করে কাটিয়ে দিলে। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখে গেলাম৷

ব্যাটারা গাছ বেয়ে ওঠা নামা করলে৷
টারজানের মত হাঁক পাড়লে অকারণ৷
চেল্লামেল্লি করলে, হেসে গড়াগড়ি খেলে৷
শ্যাডো বোলিং করলে।
একে অপরকে গাঁট্টাও কষালে বোধ হয়।
আবার ঠিক আধঘণ্টার মাথায় আবার পাঁচিল টপকে সরেও পড়লে।

ও'টুকু সময়ের মধ্যেই মনপ্রাণ আলো করে দিয়ে গেল নাম-না-জানা দু'টো ছেলে। বেঁচেবর্তে থাক বাপেরা, আনন্দে থাক। আরও বহুবছর যেন ওরা ও'ভাবেই অপ্রয়োজনে পাঁচিল টপকে এই নিরিবিলিতে এসে হুলস্থুল পাকাতে পারে৷ দু'দিন বইতো নয়৷

পুনশ্চঃ ওদের স্কুল ইউনিফর্ম সত্যিই সার্থক।

No comments: