আমি উপলবাবু মানুষটাকে আদৌ চিনিনা৷ তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় শুধুই তাঁর গানের মাধ্যমে। গানের সঙ্গে জুড়ে যায় তাঁর কিছু আঁকাআঁকি আর খুচরো লেখালিখি। কোনও কারণে আমার ধারণা হয়েছে যে ভদ্রলোক মুখচোরা৷ এ যুগে (বা হয়ত সব যুগেই) মুখচোরা মানুষদের নিয়ে মারাত্মক সমস্যা; গোলমেলে হইচইয়ের মধ্যে তাঁদের দামী মিনমিনগুলো অক্লেশে হারিয়ে যায়, এবং সে হারিয়ে যাওয়াতে তাঁদের কোনও হেলদোল থাকে না৷ সেই উপলবাবুর একটা জরুরী মিনমিন, অর্থাৎ একটা নতুন গান (আমি প্রথম শুনলাম, সে অর্থে নতুন), স্রেফ বরাতজোরে এই দু'দিন আগে হুট করে কানে এলো৷ একটা অন্যায় হল, গানটা (এবং গানের অ্যালবামটা) উপলবাবুর একার নয়; তাঁর সঙ্গে জম্পেশভাবে রয়েছেন নীলাঞ্জনবাবু৷
ইউটিউব মিউজিক যে'ভাবে এ'গান থেকে ও'গান বেয়ে আপনা থেকেই তরতরিয়ে এগিয়ে চলে, তেমনই যাচ্ছিল৷ পরপর পুরনো বাংলা ব্যান্ডের গান বাজছিল। আমি ঘাড়-মাথা দুলিয়ে আহা-বাহা করে যাচ্ছিলাম৷ এমন সময় সুট করে এই "তোমার প্রিয় ঋতু বর্ষা তাই" গানটা প্লেলিস্টে ঢুকে পড়ল৷
সরলসিধে নির্ভেজাল প্রেমের গান; সে গানের সুরে মনে হয় কলজেকে কলেজে ফেরত পাঠাই৷ সে গানের কথায় মনে হয় সেই সরল বয়সে ফিরে যাই যে'সময় নাক সিঁটকে খুঁতখুঁত করে দিন গুজরান করতে হত না; সহজ জিনিস সহজেই ভালো লাগানো যেত৷ সেই বয়স, যে বয়সে "অমুকটা ন্যাকামি, তমুকটায় ডেপথ নেই" গোছের জ্যাঠামো প্রাণকে ওষ্ঠাগত করে তোলেনি৷ এই গানটা সেই সারল্য উস্কে দেওয়া গান৷ প্রেমের গান।
"তোমার প্রিয় ঋতু বর্ষা তাই
সারা বছর ধরে মেঘ জমাই"
কী সুন্দর যে গানটা, কী ভীষণ ভালো! আমার মারাত্মক সুন্দর লেগেছে, অত্যন্ত ভালো লেগেছে৷ আর গান ভাললাগাটা লাগামছাড়া হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত।
No comments:
Post a Comment