খুব ছোটবেলার দোল খেলার স্মৃতির চেয়েও জমজমাট স্মৃতি হল ঘষেমেজে গায়ে-মুখের রঙ তোলা৷ বেশিরভাগ দোলের ছুটি মোটের ওপর মামারবাড়ির পাড়াতেই কাটত৷ দুপুরবেলা রঙে চুবনি খেয়ে বাড়িতে ফিরে বড়মামার কাছে সারেন্ডার করতে হত৷ আর বড়মামার তত্ত্বাবধানে হত রঙ-সাফাই৷ দু'টো জরুরি ব্যাপার মনের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে আছে।
এক, মুখে যে বিশ্রী এবং ঢ্যাঁটা রঙের পরত পড়ত, সে'টা সাধারণ সাবানে যাওয়ার নয়৷ তখন তো আর অর্গানিক রঙ বাজারে আসেনি, সে'সময় পারলে মুখে প্লাস্টার করে দেওয়াটাই ফ্যাশনের পর্যায় ছিল। সেই রঙকে কাবু করতে বড়মামা একটা ন্যাকড়া প্যারাশুট নারকোল তেলে ভিজিয়ে মুখ ঘষত। সে এক হাইক্লাস ফেসিয়াল, বড়মামার হাতের গুণে সে ঘষটানিও মনে হত মখমলে মালিশ৷ অসীম ধৈর্যে সে বাঁদুরে রঙ নরম হয়ে আসত।
দুই, দু'রাউন্ড শ্যাম্পুর আগে মাথার চুলে এক রাউন্ড সার্ফ-ট্রীটমেন্ট পড়ত। এক খাবলা কাপড় কাচার সাবানগুঁড়ো দিয়ে মাথার চুলের দলাইমলাই। সে'টা ধুয়ে ফেলে ক্লিনিক অল্কক্লিয়ারের দু'টো পাউচ পরপর ফায়্যার করা হত৷ তা'তে আবির রঙ গায়েব, চুল মারাত্মক ফুরফুরে। অমন দরদী হেয়ারস্পা কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রীট ঘেঁষা বাহারে সানফ্লাওয়ার সেলুনেও দেখিনি।
আজ ডাভ সাবান শ্যাম্পু দিয়ে গা-মাথা বিস্তর রগড়ে দেখলাম, নেকু অর্গানিক আবিরের কলারও তারা টেনে ধরতে পারছে না৷ ধুস্।
No comments:
Post a Comment