Thursday, July 6, 2023

আরামকুঞ্জ


আমার একটা ব্লগ আছে। সে'টার বয়স পনেরো ছাড়িয়েছে। এর আগে কোনোদিন কোনও শখ-আহ্লাদ (ক্রিকেটারের ছবি জমানো, স্টাম্প জমানো, সিগারেটের প্যাকেট জমানো, ডায়েরি লেখা, মর্নিং ওয়াক, ইত্যাদি) আঁকড়ে দিন পনেরোর বেশি থাকতে পারিনি। কিন্তু ব্লগের ব্যাপারে স্রেফ এই টেনাসিটির জন্য নিজেকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে। প্রবলভাবে দরকচা মারা পোস্ট লিখেছি, নিজের বহু লেখা পরে নিজে পড়ে শিউরে উঠেছি, দুঃখের লেখা পড়ে পেট খামচে হেসেছি, হাসির লেখা পড়ে চোখে জল এসেছে।

কিন্তু ইয়ে। ব্লগ ছেড়ে যাইনি।
যাবও না। যদ্দিন না ব্লগার প্ল্যাটফর্মটাই বন্ধটন্ধ হয়ে যায়। ব্লগ ব্যাপারটা এমনিতেই বহুদিন ধরে পড়তির দিকে। আর ব্লগিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যেও বোধ হয় ব্লগারের কদর ওয়ার্ডপ্রেস মিডিয়ামের চেয়ে বেশ কম। আমি হত্যে দিয়ে পড়ে আছি স্রেফ "শিফটিং ইজ ট্যু মাচ ওয়ার্ক" বলে। আমার লেখা যে' দু'চারজন পড়েন, তা ওই মূলত ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম গোছের প্ল্যাটফর্মেই। অথচ আমার যত আহ্লাদ তা এই পদ্মলোচন বংপেন ডট নেটকে নিয়েই। মাঝেমধ্যেই "লুক" চেঞ্জ করি। গত কয়েক শতাব্দী ধরে ব্লগারের টেমপ্লেটগুলো সেই থোড়-বড়ি-খাড়া; সে'গুলোই এ'দিক সে'দিক করে "রিডিজাইন" করি। এই উইডথ বাড়াচ্ছি, ওই ফন্টের রঙ পালটে দিচ্ছি, ইত্যাদি, ইত্যাদি। পোস্টে বানান-ব্যাকরণের দশা সকরুণ কিন্তু বাহারে কারুকাজের দিকে ষোলোআনা নজর। সামান্য জিনিসপত্র ওলটপালট করে নিজেই দেখি, নিজেই মুগ্ধ হই।

গতকাল রাত্রে আধঘণ্টা গঙ্গায় দিয়ে আবার ব্লগের রঙচঙ পালটে দিয়েছি। পাল্টানোর পর নিজে নিজেকে বলেছি, "কী করে পারিস তন্ময়। জাস্ট বিউটিফুল"। তারপর মারাত্মক তৃপ্তি নিয়ে ঘুমোতে গেছি। সে'টারই স্ক্রিনশট ফেসবুকে দেওয়ার ইচ্ছে হল, তাই এই ইয়ালম্বা কৈফিয়ত।

পুনশ্চ:
এই bongpen.net ব্যাপারটা বারান্দায় (বম্বেতে আমার বারান্দা জোটেনি, কিন্তু মনেমনে আমি চিরকালীন বারান্দিস্ট) পাতা বহুদিনের পুরনো মোড়ার মত রয়ে গেছে। হুল্লোড় করার আসবাব সে'টা নয়; সে'টা হল ধপাস করে গা-ছেড়ে বসে পড়ার হাইক্লাস আরামকুঞ্জ।

1 comment:

শান্তনিক বসাক said...

ঠিক এইরকমভাবেই চলতে থাকুন দাদা, আপনার বংপেন এখন আমাদের বংপেন। প্রতিদিনের জীবনের আটকে যাওয়া মুহূর্ত গুলোতে
বংপেনের দরজায় ছুটে আসি রিচার্জ করতে নিজেকে