- দ্যাখ পঞ্চা। দ্যাখ। ভালো করে দ্যাখ।
- কী দেখব ভজাদা?
- সিনেমা।
- সিনেমা?
- সিনেমা। এই যে, আমাদের চোখের সামনে..।
- ধুর৷ রাস্তা-ঘাট-লোকজন। ম্যাড়মেড়ে যত্তসব।
- রাস্তাটা তো সেট৷ হাইক্লাস প্রোডাকশন কোয়ালিটি। তার ওপর আবার আর্ট ফিল্ম; উঁচু দরের। আর গড়গড়িয়ে সিন এগোচ্ছে; এক শটে সব্বার ফাইনাল টেক।
- ছাতার মাথা, কোনও ডায়লগ কানে আসছে না।
- কিন্তু কী রিয়েলিস্টিক অভিনয় দ্যাখ৷ কী মারাত্মক ন্যাচুরাল এক্সপ্রেশন সবার।
- পথচলতি মানুষ যত; সবাই তো এক্সট্রা। হিরো কই? হিরোইন কই? ভিলেন কই?
- হয়ত ওই নীল হাফশার্ট নায়ক৷
- ওই পানদোকানের খদ্দের? তিরিশ সেকেন্ডের স্ক্রিন প্রেজেন্স?
- আরে হল কাঁপাতে ওই তিরিশ সেকেন্ডই যথেষ্ট। কেতটা দ্যাখ৷ কী হেলাফেলা-মার-দিয়া-কেল্লা স্টাইলে সিগারেট জ্বালালে৷
- কী গোবেচারা চেহারা দেখেছ? ও'দিয়ে দর্শকদের ঘায়েল করবে? তা'হলেই হয়েছে।
- আদত কেত থাকলে..বুঝলি পঞ্চা..ওই জিমে যাওয়া-মেকআপ নেওয়া দ্যাখনাইয়ের দরকার পরে না৷ আর আমার কী মনে হয় জানিস?
- কী মনে হয় ভজাদা?
- ওই ফুচকার দোকানের সামনে যে পিসিমা দাঁড়িয়ে...নির্ঘাৎ একজন ভিলেন৷ এক্কেবারে গব্বর সিংকে ডান হাতে কিনে বাঁ হাতে বেচে দেওয়া মানুষ৷
- মাইরি। তোমার মাথাটা জাস্ট গ্যাছে৷ অমন "এসো-বসো-লুচি-ভেজে-দিই" চেহারার রাঙাপিসিকে ভিলেন করে দেখছ..। ধুর..।
- অমন ভালোমানুষ চেহারাটাই তো পার্ফেক্ট ডিসগাইস। মোহনলাল ফুচকাওলা ওই স্পিডে খদ্দেরদের খাওয়াচ্ছে, অথচ পিসির কোনো হেলদোল নেই৷ ঠায় দাঁড়িয়ে কিন্তু ফুচকার দিকে ঘেঁষছে না৷ ব্যাপারটা কী মারাত্মক সাসপিশাস, সে'টা ভেবে দেখেছিস? নাহ্, মোগাম্বো ও পিসির পাল্লায় পড়লে জলমুড়ি খেয়ে ঘুমোতে যেত।
- বেশ৷ সামনের রাস্তাঘাট না হয় সিনেমাই হল। আমাদের এই স্ট্যান্ড করা স্কুটার না হয় সিনেমা হলের রিক্লাইনার সীটই হল৷ কিন্তু পপকর্ন? সে'টা ছাড়া চলবে কেন?
- শহরের বাতাসে যা ধুলোবালি মিশে আছে পঞ্চা, ইয়াব্বড় সিনেমা হলের ডাকাতে দামের পপকর্নের মতই গুরুপাক এ জিনিস। নিশ্চিন্তে হাওয়ার পপকর্ন চিবুতে চিবুতে সিনেমা এঞ্জয় কর। ভজহরি ফিল্মসের নিবেদন, "আজকের সন্ধ্যে"৷ আর কথা নয়, কেমন? সিনেমা দেখতে বসে বকবক আমি মোটেও বরদাস্ত করতে পারি না।
No comments:
Post a Comment