মুম্বই আসার পর থেকেই মনে হচ্ছিল যে আশেপাশে ঘোরাঘুরির জন্য চার-চাকা ব্যাপারটা মারাত্মক রকমের গোলমেলে। পেট্রোলের শ্রাদ্ধ, সময়ের অপচয়। সর্বোপরি মারাত্মক ঝকমারি; খোঁচা দেওয়ার ভয়, খোঁচা খাওয়ার ভয়, পার্কিং নিয়ে জেরবার৷ চারবাংলো বাজারে গিয়ে শান্তিতে মাছ উল্টেপাল্টে দেখব তার উপায় নেই৷
কাজেই বছর দেড়েক রকমারি স্কুটার নিয়ে রিসার্চ করলাম৷ একশো দশ সিসির ইঞ্জিন না একশো পঁচিশ সিসির ইঞ্জিন, পেট্রোল না ইলেক্ট্রিক, মাইলেজ না পার্ফর্ম্যান্স; এ নিয়ে বেশ দাঁত চিবিয়ে কথা বলা এক্সপার্ট হয়ে উঠলাম৷ আর এদ্দিন রিসার্চের পর আজ কিনে ফেললাম একটা সাইকেল৷ অতি রিসার্চে গাজন নষ্ট কথাটা নেহাৎ মিথ্যে নয়৷
ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভ স্কুল-টিউশনি করেছি একটা হিরো ইম্প্যাক্ট সাইকেলে চেপে৷ তখন সে'টাই আমার রয়্যাল এনফিল্ড। যা হোক, এদ্দিন পর প্যাডেল করতে দিব্যি লাগছে৷ পাঁচ-সাত কিলোমিটারের রেডিয়াসে স্কুটির তুলনায় সাইকেল মন্দ হবে না৷ খরচ ঝক্কি দুইই কম৷ আর খানিক কসরতও হবে৷ তা'ছাড়া মুম্বইয়ে তেমন বিশ্রী গরম বছরে বড় জোড় বছরে দু'আড়াই মাস৷ কাজেই সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াতে তেমন অসুবিধে হওয়ার কথা নয়৷
খটকা একটা ছিল এই চারমাসের বৃষ্টি নিয়ে৷ অবশ্য ছাত স্কুটারেও নেই৷ আজ প্রথম দিন; কাজেই হুজুগ সপ্তমে৷ অতএব বিকেলের দিকে বৃষ্টি ঠেলেই বেরিয়ে পড়লাম। লোখন্ডওলার যমুনানগর (যমুনা নেই, ধারেকাছে একটা সাত ময়লা চওড়া 'নালা' আছে) থেকে 'ব্যাকরোড' হয়ে চারবাংলা মার্কেট৷ ঝমঝমে বৃষ্টি হলে দাঁড়াতেই হয়, কিন্তু ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর নিরিবিলি রাস্তা দেখলাম মারাত্মক ভালো কম্বিনেশন- মনের মধ্যে লাকি আলি আর সেকেন্ড ইয়ার সদর্পে জেগে ওঠে৷
চারবাংলোয় মাছ-ভ্রমণে আসব ছুটির সকালে৷ আজ ফিরে এলাম বেলফুল কিনে, সে মালার অর্ধেক গেল খোকার দখলে, বাকিটা বেটারহাফের খোঁপায়৷
No comments:
Post a Comment