সাইকেলের জয়যাত্রা অব্যাহত৷ আজ জুহু চৌপাটি ঘুরে এলাম৷ আমাদের আস্তানা থেকে আসা-যাওয়া মিলিয়ে বড়জোর ষোলো-সতেরো কিলোমিটার পথ, খোশমেজাজেই ঘুরে এলাম৷ আর একটানা বৃষ্টিতে ধীরেসুস্থে প্যাডেল ঠেলার আনন্দই আলাদা। ডিমার্টের পাইকারি কাপড়জামার স্তুপ থেকে সম্প্রতি সস্তায় একটা রেনজ্যাকেট হাঁকিয়েছি, অতএব বৃষ্টিতে থেমে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না৷
তাড়াহুড়ো আমার না-পসন্দ৷ ঢিকিরঢিকির করে এগোই, সুবিধে মত দাঁড়িয়ে পড়ি৷ চায়ে চুমুক দিই, বিস্কুটে কামড় দিই; ফের এগোই৷ ঘ্যামস্য ঘ্যাম৷ যে রাস্তা দিয়ে এদ্দিন নিয়মিত গাড়িতে, মোটরসাইকেলে বা অফিস বাসে যাতায়াত করেছি, সে'গুলোকে নতুনভাবে চিনছি। কত চায়ের দোকান বা ভাজাভুজির স্টল যে এদ্দিন আড়ালে-আবডালে পড়েছিল; সে'সব এখন সুড়সুড় করে চোখের সামনে বেরিয়ে আসছে।
যা হোক৷ একটা জরুরী অবজার্ভেশন৷ হর্ন জিনিসটা বিশ্রী৷ শব্দদূষণ তো বটেই; ও জিনিস মেজাজ খিঁচড়ে দেয়, মুখ তিতকুটে করে দেয়, আর এন্তার হাড় জ্বালায়৷ হর্ন যত কম বাজাবেন, তত দেশের দশের ও আপনার নিজের মঙ্গল৷ কিন্তু সাইকেলের বেলের ব্যাপারে সে খিটখিট খাটে না৷ আর আমার সাইকেলে যে বেল বসানো আছে, সে'টা ঠুকলে আবার ক্রিংক্রিংও নয়, বেরিয়ে আসে মৃদু-নরম-কানেমধু লেভেলের টুংটাং৷ ও জিনিসকে বেল না বলে "ট্র্যাফিক নুপুর" বললে মানায় বেশি৷
সামনের অটোরিকশা বা গাড়িকে "প্লীজ দাদাভাই" গোছের আওয়াজ দিতে হবে? টুংটাংটুংটাং৷
হঠাৎ বৃষ্টি নামায় মেজাজ খুশ?
টুংটাংটুংটাং।
আচমকা স্পীড তুলে মনে হচ্ছে হাওয়ায় ভেসে যাওয়ার মত ব্যাপার?
টুংটাংটুংটাং।
সামান্য ক্লান্ত হয়ে হেলেদুলে এগোতে এগোতে মনকে একটু চনমনে করে তোলার দরকার?
টুংটাংটুংটাং।
ট্র্যাফিক সিগনালে পাশে দাঁড়ানো বাসের জানালা থেকে কোনো খোকা ড্যাবাড্যাবা চোখ নিয়ে সাইকেলের দিকে তাকিয়ে?
টুংটাংটুংটাং।
মোটের ওপর ওই টুংটাংটুংটাংই হলো সাইকেল চালিয়ের ধিতাংধিতাং, সে'টার ওভারডোজ হলে ক্ষতি নেই।
No comments:
Post a Comment