- আমি শিওর।
- হান্ড্রেড পার্সেন্ট?
- প্রায় হান্ড্রেড মানেটা কী?
- এই ধর, সাতানব্বুই পার্সেন্ট।
- সাতানব্বুই?
- পঁচানব্বুই বুঝলি, নাইনটি ফাইভ পার্সেন্ট শিওর ধরে নে।
- আর কমাবি না তো ভোলা?
- জোরাজুরি করলে বড় জোর বিরানব্বুই পর্যন্ত যেতে পারি৷ তবে আমি মোটের ওপর শিওর এ'টাই সেই লোক।
- আবার মোটের ওপর! উফ৷ এই কনফিডেন্স নিয়ে তোর ছিনতাইয়ে নামা উচিৎ হয়নি।
- আরে ছিনতাইই তো৷ খুনখারাপি তো নয় যে ভুল লোকের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে ফেললে "এক্সকিউজ মি, প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড" বলে ছুরি বের করে নেওয়া যাবে না। যদি দেখি ভুল বটুয়া, এ ক্ষেত্রে ফেরত দিয়ে দেওয়া যাবে।
- তা বটে। তা'হলে এই সেই লোক যে মন্মথপুর স্টেশন রোডের এসবিআই এটিএম থেকে কয়েক বান্ডিল টাকা তুলেছে। ঠিক তো?
- সবক'টা পাঁচশো টাকার নোট ভাই গুলে৷ সব'কটা।
- ভেরি গুড৷ তারপর ভদ্রলোক গিয়ে ঢুকলেন ব্লু ফ্লাওয়ার বারে।
- আমি নিজে ফলো করেছি তো। চারটে বড় পেগ হুইস্কি সাঁটালে৷ সঙ্গে দু'প্লেট ড্রাই চিলি চিকেন।
- ব্লু ফ্লাওয়ারের চিলি চিকেনের সুনাম আছে শুনেছি৷
- এই দাঁওটা মাররে পারলে না হয় সুনামটা যাচাই করে নেওয়া যাবে। কী বলিস?
- তাই হবে৷ তা বলছিলাম, দু'জনে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ব নাকি আমি একা যাই, তুমি ব্যাকআপ হিসেবে থাকো৷ বেগতিক বুঝলে তবে ছুটে আসবি..।
- লাইনে নেমে আমার প্রথম কাজ৷ তুই একা যাবি গুলে?
- আমার এক্সপিরিয়েন্স বেশি৷ তোর এখন ইন্টার্নশিপ চলছে তো। তা'ছাড়া ব্যাকআপের কাজটা খুব সিরিয়াস ভোলা। কেউ এ'দিকে আসছে কিনা তোকে খেয়াল রাখতে হবে৷ আমি কেস কেঁচিয়ে দিলে তোকে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
- বেশ৷ গুড লাক। আর শোন গুলে..।
- কী হলো?
- মনে রাখিস। আমার হাতের এই ছুরি দিয়ে পেঁয়াজ কাটতে কালঘাম ছুটে যায়৷ কাজেই আমার ডাকতে হলে জানবি বড় বিপদ। শেষে নিজের মানিব্যাগ থেকে শ'দুয়েক টাকা দিয়ে আসতে হবে।
- আসি।
**
- এই এই এই...গলায় ছুরি কেন...। এই গুলেদা..ছুরির কথা তো ছিল না।
- চোপ। অত আওয়াজ কীসের৷ ভোলা শুনতে পেলেই সব মাটি৷ ফিসফিসিয়ে বল।
- আবার ছুরি কেন..টাকা দিতেই তো এসেছি...।
- অমন ন্যালাবোলার মত সারেন্ডার করলে ভোলা সন্দেহ করবে না? টাকাটা কই।
- এই যে।
- পুরো চল্লিশ আছে?
- উনচল্লিশ। এক মত ব্লুফ্লাওয়ারে গেছে।
- তোর লজ্জা করলো না রাস্কেল?
- বা রে, অভিনয় করার বেতন নেব না নাকি।
- রিস্টওয়াচটা খুলে দে।
- এই না। বিয়েতে পেয়েছি এ জিনিস৷ টাইটানের গোল্ডেন ঘড়ি৷ দেড় হাজারের জিনিস গুলেদা। বৌ রাগ করবে।
- আরে আমি ফিরিয়ে দিয়ে দেব। আর শোন, আমার এটিম কার্ডটা দিয়ে যা।
- উফ। এ'সব না করে সোজা টাকা দিলেই তো হতো..।
- ভোলা পাত্তর মহা ঢিঁট মাল, সে ব্যাটা পার্ট টাইম ছিনতাইতে রাজি হয়ে গেল কিন্তু আমার মত গুণ্ডার থেকে ডাইরেক্ট টাকা বা সাহায্য নেবে না..।
- আজব চীজ মাইরি।
- এ'বারে ভাগ। আর ভোলা যেন তোকে পরে কোনোদিন আইডেন্টিফাই না করতে পারে..।
***
- গুনলি ভোলা?
- আরে দাঁড়া না ছাই, গুনছি তো...।
- হলো?
- উনচল্লিশ। আইব্বাস৷ এতটা ভাবিনি রে গুলে৷ তা'হলে শেয়ার কত দাঁড়ালো? সাড় উনিশ ইচ, তাই তো?
- এই ঘড়িটাও হাতিয়েছি৷ গোল্ডপ্লেটেড৷ বিদেশি ব্র্যান্ড।
- দেখা দেখি।
- দেখে কী করবি ভোলা৷ এ ব্যাপারে আমিই এক্সপার্ট৷ এর দাম অন্তত চল্লিশ বাগানো যাবে। এক কাজ কর, ঘড়িটা আমি রাখি৷ তুই ক্যাশটা রাখ।
- উন..উন..উনচল্লিশ রেখে দেব?
- আমার ঘড়ির দামের চল্লিশ।
- অ৷ আমার চেয়ে হাজার বেশি তো।
- এই নে৷ আরও পাঁচশো টাকা৷ হিসেব বরাবর। ঘড়ির দামের আর হিসেব চাইবি না।
- হে হে। গুলে, গলব্লাডারের অপারেশনটা তা'হলে করিয়েই নি এ'বারে..। কী বলিস?
- পরের দাঁওটা তা'হলে তোর অপারেশনর পরেই হোক?
- ভাই গুলে, মাইন্ড করিস না৷ তবে যা বুঝলাম, এ জিনিস আমার নার্ভে সইবে না রে।
- বেশ৷ তা'হলে আমার আবার পার্টনারশিপ ছেড়ে সোল-প্রোপ্রাইটরশিপে ফেরত যাওয়া।
- তথাস্তু।
- কালকেই হাসপাতালে যাস কিন্তু ভোলা..।
- হ্যাঁ। শুভস্য শীঘ্রম।
No comments:
Post a Comment