- বলুন।
- এ আমি কী শুনছি!
- তুমি নাকি এক্সিস্ট করো না?
- ওহ, এই কথা। তা কে বললে?
- ভোরের আলো। ঘুম ভাঙব ভাঙব করছে।
- ওহ, সেল্ফ রিয়ালাইজেশন।
- ব্যাপারটা কী, তুমি সত্যিই এক্সিস্ট করো না সাইন্টিস্ট?
- আপনার গলায় ঝোলানো মাদুলিটা কিন্তু এক্সিস্ট করে ক্যাপ্টেন। ঘুমের ঘোরেও ছুঁয়ে দেখতে পারেন।
- মাদুলিটা রিয়েল। অথচ তুমি ব্যাটাচ্ছেলে আমার ফিগমেন্ট অফ ইমাজিনেশন।
- ক্যাপ্টেন, গুরুদেবের দেওয়া মাদুলিটাই রিয়েল হয়ে রইল আপনার জীবনে। এ'টা একটা ট্র্যাজেডি বটে।
- অ্যাই এ'সব ফালতু কথা বলার কোনও মানে হয় না। রোজ ঘুমের মধ্যে এ'সব লজিকাল বকর-বকর আর সয় না।
- মাদুলিটা বাদ দিন ক্যাপ্টেন। ইউ আর বিগার দ্যান মাদুলি।
- এই, এই যে। সকালের রোদ্দুর মুখে এসে পড়ছে। এ'বার ঘুম ভাঙবে। তুমি কেটে পড়ো দেখি সাইন্টিস্ট। ঘুমের কোয়ালিটি ইমপ্যাক্ট করছে এইসব বকবক।
- আর মাদুলিটা?
- আরে গুরুদেব কি আর এমনি এমনি দিয়েছে ও জিনিস? বেস্পতিটার পোজিশনটা ঠিক নেই। তারপর আবার রবির মুভমেন্টটাও নাকি রিলায়েবল নয়। সঠিক সময়ে মাদুলির সঠিক ডোজ না পড়লে ঘরে অশান্তি বাড়বে, অফিসের প্রমোশন ফসকাবে, শেয়ারের টাকাগুলো জলে যাবে। স্পষ্ট দেখেছেন গুরুদেব।
- ক্যাপ্টেন, সংসারে অশান্তি বাড়ছে আপনি মন দিয়ে বাড়ির লোকজনের কথা শুনছেন না বলে। অফিসের প্রমোশন ফসকাচ্ছে কারণ আপনি কাজের প্ল্যানিংয়ে মন দিচ্ছে না। শেয়ারের টাকাগুলো জলে যাবে কারণ ও'টা সাট্টাবাজার নয়, সে'খানে রিসার্চ আর ধৈর্য দুইই দরকারি। চট করে টাকাটা তুলে পিপিএফ অ্যাকাউন্টে রেখে দিন, সে'খানেই আপনার স্বস্তি ও মুক্তি।
- ফের সেই এক ঘ্যানরঘ্যানর। আরে বাবা মাদুলির পাওয়ারকে আন্ডারএস্টিমেট করার কোনও মানে হয় না। আমার মেজশালা এই গুরুদেবের থেকেই মাদুলি নিয়ে ফুলকপির পাইকারি সাপ্লাইয়ের ব্যবসায় নেমে লাল হয়ে গেলো।
- সে লাল হয়েছে উদয়াস্ত খেটে।
- তুমি ভারি অ্যান্টি-মাদুলি সায়েন্টিস্ট। জাস্ট বিরক্তিকর!
- না, আমি প্রো-আপনি ক্যাপ্টেন। আমি আপনার দলে।
- যত বাজে কথা। তুমি আমার কল্পনা! আর এই যে আমার গলায় ঝুলছে এই মাদুলি; এ'টা কিন্তু এক্কেবারে রিয়েল ভায়া সায়েন্টিস্ট।
- আমায় সাইন্টিস্ট ডাকনামটা আপনারই দেওয়া, তাই না?
- স্বপ্নে আলাপ। স্বপ্নেই দেওয়া নাম।
- আপনার স্বপ্ন ফেলনা হতে যাবে কেন ক্যাপ্টেন? কত গুণী মানুষ আপনি, আর আমি সেই গুণী মানুষের বুকের সাহস ক্যাপ্টেন। আমি আপনার সাহস! আর ওই মাদুলিটা আপনার ভয়। ভেবে দেখুন, কোনটাকে রিয়েল বলে ধরে রাখতে চান।
- নাহ্। ভারি ইরিটেটিং তুমি সায়েন্টিস্ট। ভাবছি গুরুদেবের থেকে একটা বাড়তি টোটকা চাইতে হবে স্বপ্ন-লেস ঘুমের।
- টোটকাটা যদ্দিন না আপনার হাতে আসছে ক্যাপ্টেন, চেষ্টা আমায় চালিয়ে যেতে হবে। সায়েন্টিস্ট নাম দিয়েছেন, হাল ছাড়লে চলবে কেন?
- অ্যালার্মটা যে কখন বাজবে ছাই! যত্তসব গাজোয়ারি ব্যাপারস্যাপার!
( ছবিঃ জেমিনাই)
No comments:
Post a Comment