Sunday, March 16, 2025

ফুলসুতলি


- ও পিসে। চলো, সবাই বাসে বসে পড়েছে যে। এখুনি রওনা না দিলে ফুলসুতলি ফলসের ওদিককার ফ্যান্টাস্টিক সানসেট মিস করে ফেলব যে।
- তোরা এগো। আমি এ'খানে আছি।
- যাচ্চলে। তা হয় নাকি। ওঠো এ'বার।
- হব না কেন? বুড়ো দামড়া মানুষ একজন বলছে যে সে যাব না। তা না হওয়ার কি আছে?
- এদ্দূর এসে তুমি ফুলসুতলির সানসেট দেখবে না? বাবা বলে সে'টা নাকি এথিরিয়াল।
- আমি ভোলা টী স্টলের বেঞ্চিতে শুয়ে ওই গাছের পাতার দুলুনি দেখব। ভোলা বাবাজি বলেছে সে আমায় অনবরত ডিম ভেজে দেবে। কফির ব্যবস্থা নেই তবে হাইক্লাস লিকার চায়ের সাপ্লাই দেবে। তোরা বিদেয় হলে বাঁচি।
- কোথায় ফুলসুতলি আর কোথায়..।
- ফুলসুতলি ভোরবেলা পৌঁছতে হয়। ও'খানে হুজুই নামের একটা অবস্কিওর নদী আছে। তার পাশে মাদুর পেতে বসে কলা-মাখনটোস্ট-ডিমসেদ্ধ খেতে হয়। ফুলসুতলির পিছন দিকে মাতালমাথা শালবনে হাঁটাহাঁটি করতে হয়। বেলা বাড়লে ফুলসুতলিতে স্নান। দুপুরে চাট্টি ভাতেভাতের ব্যবস্থা করতে হবে। কাঠের আগুনের ওপর মাটির হাঁড়ি, চাল সেদ্ধ হতে হতে প্রায় বিকেল। সে সেদ্ধভাত খেয়ে ফুলসুতলির পাশ ঘেঁষা টিলা দিয়ে সাবধানে উঠে যেতে হবে। তারপর আসবে একটা ভ্যিউপয়েন্ট, যৌবনে এসে সে জায়গার নাম আমি দিয়ে গেছি। আলোগান পয়েন্ট। সূর্য ডুববে, অল্প শীত। শরীরে ক্লান্তি থাকবে না অথচ একটা মিষ্টি অবসন্ন ভাব।
- সর্বনাশ করছে মামা। ফুলসুতলি ফলসে আধঘণ্টা কাটিয়েই এগোতে হবে। রাত হওয়ার আগে হোটেল না ফিরলেই নয়। মেজকাকু আগে থেকে পকোড়া অর্ডার করে রেখেছে। জ্যেঠিমার হটওয়াটার ব্যাগে রিফিল দরকার। বুল্টিদি হোটেল লনে অন্তাক্ষরী খেলার ব্যবস্থা করে রেখেছে।
- চোখের সামনে থেকে দূর হয় যা ভটকাই।আমার ভোলার পবিত্র মন তোদের মত ধান্দাবাজ টুরিস্টদের পাল্লায় পড়ে যেন বিষিয়ে না যায়। যা যা! তোদের বাস বিদেয় না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার ট্র্যাভেল এঞ্জয় করতে পারছি না।

No comments: